Pages

Tuesday 29 April 2014

Basis of Animal Classification

প্রাণিজগতের শ্রেণিকরনের ভিত্তিঃ
প্রত্যেক প্রাণিরই নিজস্ব কতকগুলো বৈশিষ্ট্য বা লক্ষন থাকে। এ বৈশিষ্ট্যগুলো আকৃতি,গঠন,দৈহিক খন্ডায়ন,দৈহিক প্রতিসাম্য,দেহগহবর,লিঙ্গ,জীবনচক্র প্রভৃতির মাধ্যমে প্রকাশিত হয়।শ্রেণিবিন্যাসের প্রয়োজনে প্রাণিদেহের এসব বৈশিষ্ট্যকে প্রাধান্য দেওয়া হয়।নিচে প্রাণিদের এমন কয়েকটি প্রধান বৈশিষ্ট্যের সংক্ষিপ্ত বিবরন দেওয়া হল যেগুলো শেণিবিন্যাসের ভিত্তি রচনায় অবদান রাখতে সক্ষম।

প্রান্তিকতা[Polarity]:
একটি প্রাণিদেহের বিভিন্ন অঞ্চল নির্দেশ করতে কতকগুলো বিশেষ শব্দ ব্যবহৃত হয়।যেমনঃ
সন্মুখ[Anterior]------------মাথার প্রান্ত বা প্রান্তের দিক।
পশ্চাত[Posterior]----------লেজের প্রান্ত বা প্রান্তের দিক।
পৃষ্ঠীয়[Dorsal]---------------পিঠ বা পৃষ্ঠ ভাগ।
অঙ্কীয়[Ventral]-------------পেট বা তলদেশ।
পার্শ্বীয়[Lateral]--------------একপাশ বা পাশের দিক।
মধ্যম[Sagittal]--------------দেহের মধ্যরেখা।
নিকটবর্তী[Proximal]---------দেহের কেন্দ্রীয় অংশের কাছাকাছি।
দূরবর্তী[Distal]----------------দেহের নির্দিষ্ট অংশের দূরবর্তী অংশ।
বক্ষীয়[Pectoral]--------------বক্ষ অঞ্চল।
শ্রোণীয়[Pelvic]------------------নিতম্ব অঞ্চল।
অনুপ্রস্থ[Transverse]------------আড়াআড়ি তল।

ভ্রুণস্তর[Layers of Embryo]:
যৌন জননকারী বহুকোষী প্রাণিদের জাইগোট বিভাজনের মাধ্যমে উ পন্ন কোষ তথা ব্লাস্টোমেয়ারগুলো গ্যাস্ট্রুলা দশাতে যে সব স্তরে বিন্যস্ত হয় তাদের ভ্রুণস্তর বলে।এই স্তরগুলি হচ্ছে এক্টোডার্ম,মেসোডার্ম এবং এন্ডোডার্ম।এই তিনটি স্তর থেকে বিভিন্ন ধরনের টিস্যু,অঙ্গ ও তন্ত্র সৃষ্টি হয়।ভ্রুণস্তরের উপর ভিত্তি করে বহুকোষী প্রাণিদের দু’টি ভাগে ভাগ করা যায়।

ক]দ্বিস্তরী প্রাণী[Diploblastic Animal] যে সকল প্রাণীর ভ্রুণের গ্যাস্ট্রুলেশন পর্যায়ে কোষগুলো এক্টোডার্ম ও এন্ডোডার্ম নামক দুটি কোষীয় স্তরে বিন্যস্ত থাকে,তাদের দ্বিস্তরী প্রাণী বলে।যেমন-Cnidaria পর্বের প্রাণী [Hydra]


খ] ত্রিস্তরী প্রাণী[Triploblastic Animal] যে সকল প্রাণীর ভ্রুণে গ্যাস্ট্রুলেশন পর্যায়ে কোষগুলো এক্টোডার্ম, মেসোডার্ম এবং এন্ডোডার্ম নামক তিনটি কোষীয় স্তরে বিন্যস্ত থাকে তাদের ত্রিস্তিরী প্রাণী বলে।Platyhelminthes  to     Chordata পর্বের প্রাণীরা সকলেই ত্রিস্তরী।যেমন-ফিতা কৃমি,জোক,মানুষ ইত্যাদি।

সিলোম[Coelom]

ত্রিস্তরী প্রাণীদের ভ্রুণীয় মেসোডার্ম থেকে উদ্ভূত যে ফাকা গহবরটি দেহ প্রাচীর ও পৌষ্টিকনালির মাঝখানে অবস্থান করে এবং পেরিটনিয়াম নামক পর্দা দ্বারা আবৃত থাকে,তাকে সিলোম বা পেরিভিসারেল গহবর বলে।মূলত ত্রিস্তরী প্রাণীদের শ্রেনিকরনের ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি।
সিলোমের অনুপস্থিতি,উপস্থিতি ও প্রকৃতি অনুসারে ত্রিস্তরী প্রাণীদের তিনভাগে ভাগ করা যায়।
ক] সিলোমবিহীন[Acoelomate] যে সকল ত্রিস্তরী প্রাণীর সিলোম থাকে না,এদের পরিবর্তে এপিডার্মিস ও গ্যাস্ট্রোডার্মিসের মধ্যবর্তী স্থান প্যারেনকাইমা জাতীয় টিস্যু দ্বারা পুর্ণ থাকে,তাদের সিলোমবিহীন প্রাণী বলে।যেমন-ফিতাকৃমি একটি সিলোমবিহীন প্রাণী।

খ] অপ্রকৃত সিলোমেট[Pseudocoelomate] যে সকল প্রাণীর দেহপ্রাচীর ও পৌষ্টিকনালির মধ্যবর্তী স্থানে গহবর থাকে,কিন্তু তা মেসোডার্মাল পেরিটোনিয়াম দ্বারা আবৃত থাকে না,বরং বাইরের দিক পেশিস্তর দ্বারা বেষ্টিত থাকে তারা অপ্রকৃত সিলোমেট প্রাণী।যেমন-গোলকৃমি নেমাটোডা পর্বের একটি অপ্রকৃত সিলোমেট প্রাণী।

গ] প্রকৃত সিলোমেট[Eucoelomate] যে সকল প্রাণীর দেহ প্রাচীর ও পৌষ্টিকনালির মধ্যবর্তী স্থানে মাসোডার্ম থেকে উদ্ভূত পেরিটোনিয়াম পর্দা দ্বারা আবৃত দেহগহবর থকে,তাদের সিলোমেট প্রাণী বলে।অ্যানিলিডা থেকে কর্ডাটা পর্বের প্রাণীরা।যেমন-জোক।আবার যখন প্রাণীদেহের প্রকৃত সিলোমটি প্রবাহমান তরল পূর্ণ থাকে,তখন তাকে হিমোসিল বলে।এ ধরনের প্রাণীদের হিমোসিলোমেট বলা হয়।যেমন-তেলাপোকা,শামুক ইত্যাদি।


প্রতিসাম্যতা বা প্রতিসাম্যঃ
প্রানীদেহিকে অভ্যন্তরীন অঙ্গাদিসহ সমান সমান দুটি সদৃশ অর্ধাংশে বিভক্ত করাকে প্রতিসাম্যতা বা প্রতিসাম্য বলে।প্রতিসমতা বা প্রতিসাম্যের ভিত্তিতে প্রাণীকুলকে প্রথমে দুই ভাগে ভাগ করা যায়-
ক] অপ্রতিসমতা বা অপ্রতিসাম্য[Asymmetry] যখন কোন প্রাণীদেহকে দুই বা ততোধিক সদৃশ অংশে ভাগ করা যায় না,তখন তাকে অপ্রতিসাম্য বলে।যেমন-অধিকাংশ স্পঞ্জ,শামুক ইত্যাদি প্রাণি।

খ] প্রতিসমতা বা প্রতিসাম্য[Symmetry] কোন প্রাণিদেহেকে তার কেন্দ্রীয় অক্ষ বা তল বরাবর দুই বা ততোধিক সদৃশ অংশে ভাগ করাকে প্রতিসাম্য বা প্রতিসমতা বলে।প্রতিসাম্য প্রাণিকুলকে আবার তিনভাগে ভাগ করা যায়-

১] গোলীয় প্রতিসমতা[Shperical Symmetry] একটি গোলককে তার কেন্দে বরাবর যে কোন তলে যেমন দুটি সমান\সদৃশ অংশে ভাগ করা যায়।তেমনি প্রাণিদেহকে ভাগ করা গেলে তাকে গোলীয় প্রতিসমতা বলে।যেমন-Volvox  globator, Radiolaria,  Heliozoa ইত্যাদি।

২] অরীয় প্রতিসমতা[Radial Symmetry] কোন প্রাণীর দেহকে টার অনুদৈর্ঘ অক্ষ বরাবর বা অরীয়ভাবে যে কোন তলে ছেদ করে দুটি বা ততোধিক সমান অংশে ভাগ করা যায়,তাকে অরীয় প্রতিসাম্য প্রাণি বলে।এ সকল প্রাণি কখনও গোলাকার হয় না।যেমন-Hydra, Asterias  rubens, Metridium  senile ইত্যাদি।

৩] দ্বি-পার্শ্বীয় প্রতিসম[Birlateral  Symmetry] যখন কোন প্রাণীকে টার দেহের কেন্দ্রীয় অক্ষ বরাবর মাত্র একবার দুটি সদৃশ ও সমান অংশে ভাগ করা যায়,তখন তাকে দ্বি-পার্শ্বীয় প্রতিসমতা বলে।যেমন-রেশম পোকা[Bombyx  mori] প্রজাপতি[Bicyclus  anynana]মানুষ[Homo  sapiens] ইত্যাদি।


নটোকর্ড[Notocord]:
ভ্রুণ দেহের কাঠামো গঠনকারী নিরেট ও স্থিতিস্থাপক দন্ডকে ন্টোকর্ড বলে।ন্টোকর্ডের উপস্থিতির ভিত্তিতে প্রাণীকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়-

ক] নন-কর্ডাটাঃ এ সকল প্রাণীতে নটোকর্ড অনুপস্থিত।যেমন-পরিফেরা পর্ব থেকে ইকাইনোডার্মাটা পর্বের প্রাণী।
খ] কর্ডাটাঃ এ সকল প্রাণীর নটোকর্ড উপস্থিত।যেমন-কর্ডাটা পর্বের সকল প্রাণী।

তল[Planes]:

দৈহিক তল প্রাণীর শ্রেনীকরনের একটি গুরুত্বপূর্ন ভিত্তি।যে অঞ্চল বরাবর প্রাণীদেহকে ডান ও বাম বা অনুদৈর্ঘ্য ও অনুপ্রস্থ বা সন্মূখ ও পশ্চা অঞ্চল বরাবর দুইভাগে ভাগ করা যায়,তাকে তল বলে।প্রাণীদেহে সাধারনত তিন ধরনের তল দেখা যায়-

ক] মধ্যরেখীয় তল[Median or Sagital plane] যে তলের মাধ্যমে দেহের কেন্দ্রীয়,পৃষ্ঠীয় ও অঙ্কীয় অক্ষ বরাবর দেহকে পার্শ্বীয় ভাবে ডান ও বাম অর্ধাংশে ভাগ করা যায়,তাকে মধ্যরেখীয় তল বলে।

খ] সন্মুখ তল[Frontal plane] যে তলের মাধ্যমে দেহের পার্শ্বীয় লম্বালম্বি অক্ষ বরাবর দেহকে পৃষ্ঠীয় ও অঙ্কীয় এই দুটি অংশে ভাগ করা যায়,তাকে সন্মুখ তল বলে।

গ] অনুপ্রস্থ তল[Transverse plane] যে তলের মাধ্যমে দেহের মধ্যরেখীয় তলের সমকোন বরাবর দেহকে সন্মুখ ও পশ্চা অর্ধাংশে ভাগ করা যায়,তাকে অনুপ্রস্থ তল বলে।


খন্ডায়ন বা খন্ডীভবন[Segmentation or Metamerism] প্রাণীদেহে সদৃশ একাধিক দেহখন্ডের পুনরাবৃত্তিকে খন্ডায়ন বলে।প্রাণীদেহের এরুপ প্রতিটি খন্ডককে মেটামিয়ার বা সোমাইট বলে।গঠন ভেদে খন্ডায়ন দুই প্রকার, যথা-

ক] সদৃশ খন্ডায়ন[Homonomous Metamerism] খন্ডায়নগুলো যদি হুবহু একই রকমের হয়,তবে তাকে সদৃশ খন্ডায়ন বলে।যেমন-কেচোর দেহের খন্ডায়ন।

খ] বিসদৃশ খন্ডায়ন[Heteronomous  Metamerism] খন্ডায়নগুলো যদি হুবহু একই রকম না হয়ে ভিন্ন ভিন্ন ধরনের হয়,তাকে বিসদৃশ খন্ডায়ন বলে।যেমন-পতঙ্গের দেহের খন্ডায়ন।


অবস্থানভেদে খন্ডায়ন দুই প্রকার,যথা-
ক] সম্পূর্ণ খন্ডায়ন[Complete  Metamerism] যখন খন্ডায়নগুলো প্রাণীর দেহের বাহিরে ও ভেতরে উভয় অঞ্চলে সমানভাবে বিস্তৃত থাকে তখন তাকে সম্পূর্ণ খন্ডায়ন বলে।যেমন-কেচো, জোক প্রভৃতির খন্ডায়ন।

খ] অসম্পূর্ণ খন্ডায়ন[Incomplete  Metamerism] যখন খন্ডায়নগলো প্রাণীর দেহের বাহিরে বা ভেতরে যে কোন একদিকে সীমাবদ্ধ থাকে,তখন তাকে অসম্পূর্ণ খন্ডায়ন বলে।অসম্পূর্ণ খন্ডায়ন আবার দুই প্রকার, যথা-

অ] বহিঃখন্ডায়নঃ খন্ডায়নগুলো কেবলমাত্র বাহিরে সীমাবদ্ধ থাকে।যেমন-তেলাপোকা,মাছি প্রভৃতির খন্ডায়ন।

আ] অন্তঃখন্ডায়নঃ খন্ডায়নগুলো কেবলমাত্র দেহের অভ্যন্তরে সীমাবদ্ধ থাকে।মেরুদন্ডের কশেরুকা,অন্ত্রের খন্ডায়ন।



প্রকৃতিভেদে খন্ডায়ন দুই প্রকার,যথা-
ক] প্রকৃত খন্ডায়ন[True Metamerism] খন্ডায়নগলো একই ধরনের হলে এবং তা দেহ থেকে বিচ্যুত না হলে তাকে প্রকৃত খন্ডায়ন বলে।যেমন-কেচো, তেলাপোকা প্রভৃতির খন্ডায়ন।


খ] অপ্রকৃত খন্ডায়ন[Pseudo Metamerism] খন্ডায়নগুলো ভিন্ন ধরনের হলে এবং তা দেহ থেকে বিচ্যুত না হলে তাকে অপ্রকৃত খন্ডায়ন বলে।যেমন-ফিতা কৃমির খন্ডায়ন।এরুপ খন্ডায়নগুলোকে প্রোগ্লোটিডও বলে।




 নির্দেশনাঃডঃশিল্পী রানী সাহা,রনজিত কুমার সাহা প্রমুখ লেখক গনের সহায়তায় লিপিবদ্ধ।



Tuesday 22 April 2014

Classification upto major phylum of Non-Chordata

মহাবিশ্বের মধ্যে পৃথিবীই একমাত্র গ্রহ যেখানে রয়েছে জীবন এবং লক্ষ লক্ষ জীবের সমাবেশ।পৃথিবীতে এ পর্যন্ত  আবিস্কৃত প্রানী-প্রজাতির সংখা প্রায় পনের লক্ষ।এদের গঠন,আবাস,কাজ,আচরন,অভ্যাস ইত্যাদিতে রয়েছে যথেষ্ট ভিন্নতা।সাধারন ভাবে এটাই হচ্ছে প্রাণিবৈচিত্র বা Animal Diversity ।Animal diversity শব্দটি Biodiversity-র অংশবিশেষ যা কেবলমাত্র প্রাণীর জন্য প্রযোজ্য।১৯৮০ সালে প্রকাশিত দুটি প্রবন্ধের শিরোনামে[“Changes in Biological Diversity”and “Ecology and living resources-Biological Diversity”]প্রথম Biological Diversity শব্দের সন্ধান পাওয়া যায়।Biological Diversity শব্দ দু’টিকে একত্রিত করে যুক্তরাষ্টের বিজ্ঞানী Walter G. Rosen[1986]প্রথম Biodiversity শব্দটি ব্যবহার করেন।

প্রাণিকুলের পারস্পরিক সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্যের উপর ভিত্তি করে আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসারে প্রাণিসমুহকে পর্ব,শ্রেনী,বর্গ,গোত্র,গন,প্রজাতি ইত্যাদি স্তর বা উপস্তরে বিন্যস্ত করাকে বলা হয় শ্রেনীবিন্যাস।বিশাল বৈচিত্রময় প্রাণিজগত সম্পর্কে অল্প সময়ে কম পরিশ্রমে সংক্ষেপে জানার জন্য প্রয়োজন একটি উপযুক্ত শ্রেনীবিন্যাস।প্রাণিজগতের প্রধান বা মেজর পর্ব দুটি নন-কর্ডেট এবং কর্ডেট, নিম্নে নন-কর্ডাটা এর শেনীবিন্যাস আলোচিত হলঃ

Porifera:   [Porus=ছিদ্র+Ferre=বহন করা]

বিজ্ঞানী Robert Grant[1836] সর্বপ্রথম পরিফেরা পর্বটির নামকরন করেন।এই পর্বের আবিস্কৃত মোট প্রজাতির সংখা প্রায় ৯,০০০।এই পর্বের প্রানিগুলো সাধারনত ‘স্পঞ্জ’ নামে পরিচিত।



বৈশিষ্ট্য
১] দেহে অস্টিয়া নামক অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র এবং অস্কুলা নামক এক বা একাধিক ছিদ্র থাকে।এই অস্কুলামের মাধ্যমে দেহের অভ্যন্তরে স্পঞ্জোসিল নামক গহবর দেহের বাইরে উন্মুক্ত হয়।
২] দেহের কোষগুলোর বাইরে পিনাকোডার্ম ও ভেতরে কোয়ানোডার্ম নামক দুটি স্তরে বিন্যস্ত থাকে।স্তর দুটির মাঝে মেসেনকাইম নামক জেলির মত অকোষীয় পদার্থ থাকে।
৩] দেহে অ্যাসকোনয়েড,সাইকনয়েড ও লিউকোনয়েড নামক বিভিন্ন ধরনের নালিতন্ত্র দেখা যায় এবং এদের অন্তঃকংকাল ক্যালসিয়াম বা সিলিকার তৈরি স্পিকিউল তন্তু বা স্পঞ্জিন তন্তু বা উভয় দ্বারা গঠিত।
৪] এদের যৌন ও অযৌন উভয় ধরনের প্রজনন পদ্ধতি দেখা যায় এবং জীবনচক্রে AmphiblastulaParenchymula লার্ভা দেখা যায়।
৫] এরা সকলে সামূদ্রিক,কংকালতন্ত্র বিহীন এবং দ্বিস্তরীভূত।

উদাহরনঃ Scypha gelatinosum, Spongilla locustria, ইত্যাদি।


 Cnidaria বা Coelenterata:  [Gr.Knide=ক্ষুদ্র আকৃতির কাটা(L)area=সংযুক্তি]

এই পর্বটির নামকরন করেন Hatschek[1888]।এই পর্বের আবিস্কৃত মোট প্রজাতির সংখ্যা প্রায় ১০,০০০।

বৈশিষ্ট্যঃ

১] এরা বহুকোষী,দ্বিস্তরী,বাইরের স্তর এক্টোডার্ম ও ভেতরের স্তর এন্ডোডার্ম নামে পরিচিত।স্তর দুটির মাঝে মেসোগ্লিয়া নামক অকোষীয় স্তর বিদ্যমান।
২] দেহের অভ্যন্তরে সিলেন্টেরন নামক একটি প্রশস্ত গহবর বিদ্যমান।
৩] এক্টোডার্মে নেমাটোসিস্ট ধারনকারী নিডোব্লাস্ট নামক বিশেষ ধরনের কোষ বিদ্যমান।
৪] পরিপাক অন্তঃকোষীয় ও বহুকোষীয় এবং মুখছিদ্রের চারিদিকে অনেক কর্ষিকা থাকে।
৫] জীবনচক্রে পলিপ[অযৌন দশা]এবং মেডুসা[যৌন দশা] দেখা যায়।

উদাহরনঃ Hydra  valgaris,  Aurelia  aurita.

Platyhelminthes or Plathelminthes:[Gr.Platys=Flat+Helminth=wormচ্যাপ্টা কৃমি]

বিজ্ঞানী Karl Gegenbaur [1859] সর্বপ্রথম এই পর্বটির নামকরন করেন।আবিস্কৃত মোট প্রজাতির সংখা প্রায় ২০,০০০।পর্বটির প্রানিগুলো সাধারনত ‘চ্যাপ্টাকৃমি’ নামে পরিচিত।

বৈশিষ্ট্যঃ

১] দেহপৃষ্ঠ-অঙ্কীয়ভাবে চ্যাপ্টা,দ্বি-পার্শ্বীয় প্রতিসম, অধিকাংশই পরজীবী এবং পৌষ্টিকনালী অসম্পূর্ন।
২] দেহ ত্রিস্তরী,এক্টোডার্ম,মেসোডার্ম এবং এন্ডোডার্ম স্তরে বিভেদিত।
৩] সিলোমবিহীন মেসোডার্ম থেকে উৎপন্ন প্যারেনকাইমা জাতীয় কোষ দেহের অভ্যন্তরে ফঁাকা স্থাঙ্গুলো পূর্ণ করে।
৪] রেচন অঙ্গ শাখা-প্রশাখা যুক্ত এবং শিখা কোষ  নামে পরিচিত।
৫] জীবনচক্রে  Miracidium,Radia প্রভৃতি লার্ভা দশা দেখা যায়।

উদাহরনঃ Fasciola  hepaticaTaenia  solium ইত্যাদি।


Nematoda:[Gr.Nematos=Thread+eidos=সূতা আকৃতি]

বিজ্ঞানী  K.M.Diesing[1861]প্রথম এই শব্দটি ব্যবহার করেন।এই পর্বের শনাক্তকৃত মোট প্রজাতির সংখ্যা প্রায় ২৮,০০০।পর্বটির প্রানিগুলো সাধারন্ত সুতাকৃমি নামে পরিচিত।

বৈশিষ্ট্যঃ

১] দেহ লম্বা , নলাকার,অখন্ডায়িত সুতার মত,পুরু কিউটিকল দ্বারা আবৃত এবং দেহ প্রাচীরে অনুদৈর্ঘ্য পেশি থাকে কিন্তু বৃত্তাকার পেশি থাকে না।
২] এরা ত্রিস্তরী ও সিউডোসিলোমেট,এদের অধিকাংশ পরজীবী,কিছু মুক্তজীবী,সাধারন্ত একলিঙ্গ ও যৌন দ্বিরুপতা সুস্পষ্ট।
৩] পৌষ্টিকনালী সোজা,অশাখান্বিত ও সম্পূর্ণ কিন্তু পৌষ্টিক গ্রন্থি অনুপস্থিত।
৪] দেহে রক্তসংবহন তন্ত্র অনুপস্থিত, তবে স্নায়ুতন্ত্র ও একজোড়া পার্শ্বীয় রেচননালী নিয়ে রেচনতন্ত্র গঠিত।
৫] এদের কোন কোন প্রজাতিতে র‍্যাবডিটিফর্ম ও মাইক্রোফাইলোরিয়া লার্ভা দশা দেখা যায়।

উদাহরনঃ Ascaris  lumbricoides,  Wuchereria  bancrofti ইত্যাদি।

Mollusca:    [Gr.Mollis=কোমল বা নরম]

বিজ্ঞানী Linnaeus [1758]এই পর্বটির নামকরন করেন। আবিস্কৃত মোট প্রজাতির সংখ্যা প্রায় ৮৫,০০০। পর্বটির প্রানিগুলো সাধারন্ত ‘Molluscs or mollusks’নামে পরিচিত।

বৈশিষ্ট্যঃ

১] দেহ নরম, ম্যান্টল নামক পর্দা দ্বারা আবৃত,অখন্ডায়িত,দ্বিপাশ্বীয় প্রতিসম বা অপ্রতিসম।
২] ত্রিস্তরী ও প্রকৃত সিলোমেট, সিলোম হিমোসিল প্রকৃতির এবং কেবলমাত্র হ্নদপিন্ড,জনন অঙ্গ, ও বৃক্কে সীমাবদ্ধ থাকে।
৩] ম্যান্টাল পর্দা থেকে ক্যালসিয়াম নিঃসৃত হয়ে অনেক প্রজাতিতে দেহের বাইরে বা দেহের ভিতরে খোলক থাকে এবং পৌষ্টিকনালী সম্পূর্ণ,প্যাচানো বা Uআকৃতির।
৪] রক্ত সংবহনতন্ত্র আংশিক মুক্ত বা বদ্ধ এবং ফুলকা বা ম্যান্টল পর্দার সাহায্যে শ্বসন সম্পন্ন করে।
৫] প্রিস্ফুটনকালে ট্রোকোফোর বা গ্লোচিডিয়াম লার্ভা দশা দেখা যায়।

উদাহরনঃ Pila  globosa , Lamellidens  marginalis   ইত্যাদি।

Annelidia:     [Annulus=little ring ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আংটি]

বিজ্ঞানী লেমার্ক ১৮০৯ সালে সর্ব প্রথম এই পর্বটির নামকরন করেন।আবিস্কৃত মোট প্রজাতির সংখ্যা ২২,০০০ প্রায়।এই পর্বটির প্রানিগুলি সাধারনত রিং ওয়ার্ম নামে পরিচিত।

বৈশিষ্ট্যঃ

১] দেহ লম্বা নলাকার বা কিছুটা চ্যাপ্টা,অসংখ্য সরু আংটির মত খন্ড বা সম্পূর্ণ খন্ডায়িত এবং দ্বিপার্শ্বীয় প্রতিসম।
২] ত্রিস্তরী,প্রকৃত সিলোমেট এবং প্রধান রেচন অঙ্গ  নেফ্রেডিয়া।
৩] প্রধান চলন অঙ্গ সিটা বা প্যারাপোডিয়া ।
৪] রক্ত সবহনতন্ত্র বদ্ধ,রক্তরসে হিমোগ্লোবিন নামক লাল রঞ্জক কনিকা থাকে,তবে লোহিত রক্ত কনিকা থাকে না।
৫] জীবনচক্রে ট্রোকোফোর লার্ভা দেখা যায়।

উদাহরনঃ  Hirudo  medicinalis,  Metaphire  posthuma ইত্যাদি।

Arthropoda:    [Gr.Arthos=সন্ধি+Podos=পদ]

Latreille [1829] সর্বপ্রথম এই নামটি ব্যবহার করেন।আবিষ্কৃত মোট প্রজাতির সংখ্যা প্রায় ১,১৭০,০০০ যা সমস্ত প্রজাতির ৮০%।

বৈশিষ্ট্যঃ

১] দেহ সন্ধিযুক্ত উপাঙ্গবিশিষ্ট।বহিঃখন্ডকিত,কাইটিন নির্মিত বহিঃকঙ্কাল দ্বারা আবৃত এবং শিরঃবক্ষ ও উদরে বিভক্ত।
২] প্রকৃত সিলোম বিদ্যমান যা হিমোসিল ধরনের এবং হিমোলিম্ফ নামক তরলে পূর্ণ।
৩] প্রধান শ্বসন অঙ্গগুলি হচ্ছে ফুলকা,বকলাং,ট্রাকিয়া, বুকগিল,দেহত্বক,এবং প্রধান রেচন অঙ্গগুলি ম্যালপিজিয়ান নালিকা,সবুজ গ্রন্থি,কক্সাল গ্রন্থি।
৪] রক্ত সংবহনতন্ত্র মুক্ত এবং প্রধান দর্শনেন্দ্রিয় পুঞ্জাক্ষি বা সরলাক্ষি।
৫] পরিস্ফুটন সরাসরি বা লার্ভাদশার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।

উদাহরনঃ Periplaneta   Americana , Apis   indica  ইত্যদি।

Echinodermata       Gr.Echinos=কন্টক +Derma=ত্বক]

বিজ্ঞানী  Klein [1734] এই পর্বটির নামকরন করেন। আবিস্কৃত মোট প্রজাতির সংখ্যা প্রায় ৭,০০০।

বৈশিষ্ট্যঃ

১] দেহত্বক কন্টকযুক্ত,পরিনত অবস্থায় অরীয় প্রতিসম,অন্তঃকঙ্কাল ক্যালসিয়াম-কার্বনেট নির্মিত অসংখ্য অসিকল বা স্পাইন নিয়ে গঠিত।
২] দেহ সাধারনত ওরাল ও অ্যাবোরাল তলে বিভক্ত এবং ত্বকীয় ফুলকা বা প্যাপুলি শ্বসন অঙ্গ হিসাবে কাজ করে।
৩] দেহের অভ্যন্তরে উন্নত ধরনের পানি সংবহনতন্ত্র থাকে এবং নালি পদের সাহায্যে চলন সম্পন্ন করে থাকে।
৪] এদের নির্দিষ্ট রেচনতন্ত্র অনুপস্থিত, রক্তসংবহনতন্ত্র অনুপস্থিত তবে হিমাল ও পেরিহিমালতন্ত্র সংবহন্তন্ত্রের কাজ করে , সেইসাথে স্নায়ুতন্ত্র ও জ্ঞানেন্দ্রিয় অনুন্নত।
৫]এদের জীবনচক্রে বাইপিনারিয়া, ব্রাকিওলারিয়া, প্লুটিয়াস প্রভৃতি মুক্ত সন্তরনশীল লার্ভা দশা দেখা যায়।

উদাহরনঃ  Asterias   rubens Cucumaria   frondosa ইত্যাদি।


Reference: প্রফেসর মেঘনাদ সাহা,প্রফেসর আবু সাঈদ বিশ্বাস,প্রফেসর রনজিৎ কুমার সাহা,ডঃ শিল্পী রানী সাহা প্রমুখ।