Pages

Sunday 2 December 2018

মযালেরিয়া


১) ম্যালেরিয়া কী ?

উত্তরঃ Protozoa উপরাজ্যের Apicomplexa পর্বের অন্তর্গত Plasmodium গনের পরজীবী দ্বারা আক্রান্ত এক ধরনের মারাত্বক জ্বর রোগ ।

২) পরজীবী বলতে কি বুঝ ?

উত্তরঃ যে সকল জীব জীবন ধারনের জন্য আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে অন্য প্রজাতিভুক্ত জীবের দেহে বাস করে উক্ত জীবের ক্ষতিসাধন করে নিজে উপকৃত হয় তাদের পরজীবী বলে ।

৩) পোষক বলতে কি বুঝ ?

উত্তরঃ যে সকল জীবদেহে পরজীবী বসবাস করে পুষ্টিদ্রব্য গ্রহন করে পুষ্ট হয় তাকে পোষক বলে । যেমন-ম্যালেরিয়া পরজীবী

৪) নির্দিষ্ট পোষক বলতে কি বুঝ ?

উত্তরঃ যেসব পোষকে পরজীবী তার যৌন জনন সম্পন্নের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ দশা অতিবাহিত করে তাকে নির্দিষ্ট বা প্রাথমিক পোষক বলে । যেমন-ম্যালেরিয়া পরজীবীর প্রাথমিক পোষক স্ত্রী অ্যানোফিলিস মশা ।

৫) অন্তবর্তী পোষক বলতে কি বুঝ ?

উত্তরঃ যেসব পরজীবী পোষকের দেহে অযৌন জনন সম্পন্নের মাধ্যমে লার্ভা দশা অতিক্রান্ত করে তাকে অন্তবর্তী বা গৌন পোষক বলে । যেমন-ম্যালেরিয়া পরজীবীর অন্তবর্তী পোষক মানুষ ।

৬) হেপাটিক সাইজোগনি বলতে কি বুঝ ?

উত্তরঃ মানুষের যকৃতে ম্যালেরিয়া পরজীবীর বহুবিভাজন প্রক্রিয়ায় অযৌন জননকে হেপাটিক সাইজোগনি বলে । এর দুটি পর্যায় রয়েছে-১) প্রি-এরিথ্রোসাইটিক সাইজোগনি ২) এক্সো এরিথ্রোসাইটিক সাজোগনি ।

৭) মযালেরিয়া আক্রান্ত রোগীর রক্ত স্বল্পতার কারন উল্লেখ কর ?

উত্তরঃ কারন সমুহ নিন্মরূপ –
      পরজীবী কতৃক সৃষ্ট হিমোলাইসিন লোহিত রক্ত কনিকার বিগলন ঘটায়।
      আক্রান্ত প্লীহা থেকে লাইসোলেসিথিন নামক যে রস নিঃসৃত হয় তা লোহিত কনিকাকে ধ্বংস করে।
      লোহিত রক্ত কনিকা থেকে মেরোজয়েট বের হওয়ার সময় কনিকা ধ্বংস হয় ।
      ম্যালেরিয়া রোগাক্রান্ত রোগীর যকৃত আক্রান্ত হওয়ার কারনে কনিকা সৃষ্টি বাধাগ্রস্ত হয় ।

৮) স্পোরোগনি কী ?

উত্তরঃ মশকীর ক্রপের প্রাচীরে উওসিস্টের অযৌন জননকে স্পোরোগনি বলে ।

৯) রোজেট কী ?

উত্তরঃ পরিনত সাইজন্টে বহুবিভাজন ঘটে ১২-১৮ টি গোল বা ডিম্বাকার মেরোজয়েট সৃষ্টি করে । এগুলো পাপড়ির মতো দুটি স্তরে সাজানো থাকে, পরজীবীর এ অবস্থাকে রোজেট বলে ।

১০) সিগনেট রিং বলতে কি বুঝ ?

উত্তরঃ ট্রফোজয়রটের অভ্যন্তরে একটি গহ্বর সৃষ্টি হয়ে ক্রমশ তা বড় হয়ে সাইটোপ্লাজমকে পরিধির দিকে সরিয়ে দেয় এবং নিউওক্লিয়াসও একপাশে সরে যায় । পরজীবীকে তখন পাথর বসানো আঙ্গটির মত দেখায় , একেই সিগনেট রিং বলে ।

১১) সাইজণ্ট কী ?

উত্তরঃ বহ নিউক্লিয়াস বিশিষ্ট ম্যালেরিয়া পরজীবীর দশাকে সাইজন্ট বলে ।

১২) হিপনোজয়েট বলতে কি বুঝ ?

উত্তরঃ মানবদেহে প্রবেশিত সমস্ত স্পোরোজয়েটই যকৃৎ পর্যন্ত পৌছতে পারে না । কিছু স্পোরোজয়েট যকৃৎ কোষে বৃদ্ধি না পেয়ে বরং সুপ্তাবস্থায় বিরাজ করে । যকৃতকোষে স্পোরোজয়েটের এই সুপ্তাবস্থাকে হিপনোজয়েট বলে ।

১৩) পাইরোজেন কী ?

উত্তরঃ রক্তরসে ম্যালেরিয়া পরজীবীর মেরোজয়েট ছড়িয়ে পড়লে তাকে প্রতিহত করতে শ্বেত রক্তকনিকা প্রচুর পরিমানে যে রাসায়নক পদার্থ ক্ষরন করে তাকে পাইরোজেন বলে ।

১৪) সাইজোগনি বলতে কি বুঝ ?

উত্তরঃ মানবদেহে ম্যালেরিয়া পরজীবীর অযৌন জননকে সাইজোগনি বলে । মানুষের যকৃতকোষ ও লোহিত রক্তকনিকায় এই চক্র সংঘটিত হয়।

১৫) গ্যামেটোগনি বলতে কি বুঝ ?

উত্তরঃ মশকীর ক্রপের ভেতরে সংঘটিত ম্যালেরিয়া পরজীবীর যোন জননচক্রকে গ্যামেটোগনি বলে ।

১৬) স্পোরোগনি বলতে কি বুঝ ?

উত্তরঃ মশকীর ক্রপের বহিঃপ্রাচীরে সনহঘটিত ম্যালেরিয়া পরজীবীর অযৌন জননকে স্পোরোগনি বলে ।

১৭) বায়োলজিক্যাল ভেক্টর বলতে কি বুঝ ?

উত্তরঃ যে প্রানী ( বিশেষ করে পতঙ্গ বাহক) কোন পরজীবীকে এক পোষক থেকে অন্য পোষকের দেহে বহন করে নিয়ে যায় এবং অপর পোষকে সঞ্চারিত করার আগে ভেক্টরের দেহে পরজীবীর বংশবৃদ্ধি ঘটলে সেই ভেক্টরকে বায়োলজিক্যাল ভেক্টর বলে।

১৮) কেমোট্যাক্সিস কী ?

উত্তরঃ কোন রাসায়নিক উদ্দীপকের পভাবে কোন জীব বা জননকোষের চলন।

১৯) ক্রিপ্টোমেরোজয়েট বলতে কি বুঝ ?

উত্তরঃ সাইজিন্টের প্রতিটি নিউক্লিয়াসকে ঘিরে সাইটোপ্লাজম জমা হয়ে যে নতুন কোষের সৃষ্টি করে তাদেরকে ক্রিপ্টোমেরোজয়েট বলে ।

২০) ক্রপ অঞ্চল কী ?

উত্তরঃ মশকীর গ্রাসনালির পিচন দিকে অবস্থিত থলির মত একটি স্ফীত অংশ ।

২১) এক্সফ্লাজেলেশন বলতে কি বুঝ ?

উত্তরঃ ক্রপের অভ্যন্তরে মাইক্রোগ্যামেটের দেহটি সরু ফ্লাজেলাযুক্ত হয় এবং মাইক্রোগ্যামেট সৃষ্টি করে । ক্রপের গহ্বরে ম্যালারিয়া পরজীবীর স্পার্মাটোজেনেসিসের এ বিশেষ প্রক্রিয়াকে এক্সফ্লাজেলেশন বলে ।

২২) ফেব্রাইল পারঅক্সিজম কী ?

উত্তরঃ ম্যালেরিয়া জ্বরের ক্ষেত্রে শীত , উত্তাপ , ঘর্মাবস্থা এই তিনটি অবস্থাকে একত্রে ফেব্রাইল পারক্সিজম বলে ।

২৩) উওকিনেট বলতে কি বুঝ ?

উত্তরঃ মশকীর রক্ত শোষনের ১২-১৪ ঘন্টা পর গোল ও নিশ্চল জাইগোটটি কীটের মত লম্বাটে ও সচল হয়ে ওঠে । তখন একে উওকিনেট বলে ।

২৪) উওসিস্ট বলতে কি বুঝ ?

উত্তরঃ মশকীর ক্রপের এপিথেলিয়াম ও বহিঃস্থ পেশি স্তরের মাঝখানে উওকিনেট একটি পাতলা , নমনীয় সিস্ট আবদ্ধ হয়ে গোলাকার ধারন করে , এই অবস্থায় পরজীবীটিকে উওসিস্ট বলে ।

২৫) জনুক্রম বলতে কি বুঝ ?

উত্তরঃ কোন জীবের জীবন ইতিহাসে অযৌন ও যৌন জনুর পর্যায়ক্রমিক আবর্তনকে জনুক্রম বলে ।

২৬) এনোফিলিস মশকীর কোন ৬ টি প্রজাতি ম্যালেরিয়া রোগের বিস্তার ঘটায় ?

উত্তরঃ Anopheles culicifacies , A. stephensi , A. fluviatilis , A. dirus , A. sundaicus , A. minimus .

২৭) ম্যালেরিয়া পরজীবীর নামগুলি লিখ ।

উত্তরঃ Plasmodium vivax ,Plasmodium malariae,Plasmodium ovale, Plasmodium falciparum.

২৮) কেবল স্ত্রী মশাই এ রোগ ছড়ায় কেন ?

উত্তরঃ স্ত্রী মশকীর ডিম্বাণুর পরিস্ফুটনের জন্য উষ্ণ রক্তবিশিষ্ট প্রানীর রক্ত প্রয়োজন । তাই কেবলমাত্র স্ত্রী মশকীরাই রক্ত পান করে এবং জীবাণুর বিস্তার ঘটায় । পুরুষ মশারা ফুলের মধু বা অন্যান্য উৎস থেকে খার সংগ্রহ করে মানুষকে দংশন করে না ।

২৯) অন্য মশকী ম্যালেরিয়া রোগের জীবাণু ছড়াউ না কেন ?

উত্তরঃ কিউলেক্স বা এডিস প্রভৃতি মশকীর পরিপাকতন্ত্রে ট্রিপসিন নামক বিশেষ ধরনের এনজাইম থাকে যা জীবাণুর গ্যামেটোসাইটগুলোকে নষ্ট করতে সক্ষম । তাই এনোফিলিস ব্যাতীত অন্য কোন মশকী এ জীবাণুর বিস্তার ঘটাতে পারে না।

৩০) ম্যালেরিয়া পরজীবীর ক্ষেত্রে জনুক্রমের তাৎপর্য বিশ্লেষন কর ।

উত্তরঃ ১) জীবাণুর প্রজাতীর ধারাকে অক্ষুন্ন রাখে ।
        ২) জীবাণুর জিবনীশক্তিকে ফিরিয়ে আনে ।
         ৩) জীবাণুর বিস্তৃতিতে সহায়তা করে 
          ৪) জীবাণুর জীবন প্রবাহকে সহজতর করে ।

Thursday 29 November 2018

ব্যাকটেরিয়া


১) ব্যাকটেরিয়া কী ?

উত্তরঃ কোষীয় অঙ্গাণুবিহীন , জটিল কোষপ্রাচীর ও আদিপ্রকৃতির নিউক্লিয়াস বিশিষ্ট ক্ষুদ্রতম সরল প্রকৃতির এককোষী আণুবীক্ষণিক জীব।

২) সিউডোনিউক্লিয়াস বলতে কি বুঝ ?

উত্তরঃ ব্যাকটেরিয়ার নিউক্লিয়াসকে সিউডোনিউক্লিয়াস বলে । কারন ব্যাকটেরিয়ার নিউক্লিয়াসে নিউক্লিয়ার আবরনী ও নিউক্লিওলাস থাকে না এবং কোন হিস্টোন প্রোটিনও পাওয়া যায় না ।

৩) ব্যাকটেরিয়াকে আদিকোষী বলা হয় কেন ?

উত্তরঃ যে কোষে নিউক্লিয়ার আবরনী এবং সুগঠিত নিউক্লিয়াস থাকে না তাকে আদিকোষ বলে । ব্যাকটেরিয়া মনেরা কিংডমের এককোষী আণুবীক্ষণিক অণুজীব এবং এদের নিউক্লিয়াস সুগঠিত নয় অর্থাৎ নিউক্লিয়ার মেমব্রেন এবং নিউক্লিওলাস অনুপস্থিত।

৪) প্লাজমিড কী ?

উত্তরঃ ব্যাকটেরিয়াতে প্রধান বংশগতি বস্তু ডিএনএ ছাড়াও কিছু ক্ষুদ্র , গোলাকার , দ্বিতন্ত্রী ডিএনএ অণু সাইটোপ্লাজমে দেখা যায় এগুলোকে প্লাজমিড বলে । এরা স্ববিভাজনক্ষম এবং বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের জন্য নির্ধারিত জিন বহন করে ।

৫) ফ্লাজেলা বলতে কি বুঝ ?

উত্তরঃ সাইটোপ্লাজমের বহিঃস্তর থেকে সৃষ্টি হয়ে কোষঝিল্লি ও কোষপ্রাচীর ভেদ করে বাইরে প্রসারিত সূক্ষ দীর্ঘ সুতার মত অংশ যা ব্যাকটেরিয়ার চলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে ।

৬) পিলি কী ?

উত্তরঃ ফ্লাজেলা ছাড়াও কোন কোন ব্যাকটেরিয়ার বহির্গাত্রে অসংখ্য সূক্ষ সূত্রাকার উপাঙ্গ দেখা যায় , এগুলোকে পিলি বলে ।

৭) অযৌন জনন বলতে কি বুঝ ?

উত্তরঃ গ্যামেট উৎপাদন ও মিলন ছাড়াই একটিমাত্র মাতৃদেহ থেকে নতুন জীবের সৃষ্টি হওয়াকে অযৌন জনন বলে ।

৮) দ্বিভাজন বলতে কি বুঝ ?

উত্তরঃ যে অযৌন জনন পদ্ধতিতে ব্যাকটেরিয়ার কোষদেহটি সরাসরি বিভাজিত হয়ে হুবহু একই রকম দুটি অপত্য কোষের সৃষ্টি করে এবং প্রতিটি অপত্য কোষ পরিণত হয়ে পুনরায় একইভাবে বিভাজিত হয়ে অসংখ্য অপত্য কোষের সৃষ্টি করে এই প্রক্রিয়াকে দ্বিভাজন বলে ।

৯) এন্ডোস্পোর বলতে কি বুঝ ?

উত্তরঃ প্রতিকূল পরিবেশে উপযুক্ত খাদ্যের অভাবে ব্যাকটেরিয়া কোষের প্রোটোপ্লাস্ট সংকুচিত হয়ে গোল বা ডিম্বাকার ধারন করে চারিদিকে একটি পুরু আবরন তৈরি করে যাকে এন্ডোস্পোর বলে ।

১০) রেটিং স্পোর কী ?

উত্তরঃ সাধারনত Bacillaceae গোত্রের ব্যাকটেরিয়া প্রতিকূলতা প্রতিরোধের কৌশল হিসাবে দেহের চারিদিকে যে গোলাকার আবরন তৈরি করে তাকে রেটিং স্পোর বলে।

১১) ভেক্টর কী ?

উত্তরঃ রোগের জীবাণুকে একস্থান থেকে অন্য স্থানে বহনকারী জীবিকেই ভেক্টর বলা হয় ।

১২) ক্রোম্যাটোফোর কী ?

উত্তরঃ যে সকল ব্যাকটেরিয়া সালোকসংশ্লেষণে অংশ গ্রহন করে তাদের দেহে ক্লোরোপ্লাস্টের পরিবর্তে ক্রোম্যাটোফোর থাকে।

১৩) মেসোজোম বলতে কি বুঝ ?

উত্তরঃ ব্যাকটেরিয়ার প্লাজমামেম্ব্রেন কখনও কখনও ভিতরের দিকে ভাঁজ হয়ে একটি বিশেষ ধরনের থলি গঠন করে তাকে মেসোজোম বলে। ইহা ব্যাকটেরিয়ার শ্বসন ও কোষ বিভাজনের সাথে জড়িত।

১৪) গোনিডিয়া কী ?

উত্তরঃ সূত্রাকার ব্যাকটেরিয়ার সচল কনিডিয়াকে গোনিডিয়া বলে ।

১৫) কনিডিয়া বলতে কি বুঝ ?

উত্তরঃ সূত্রাকার স্ট্রেপটোমাইসিস ব্যাকটেরিয়া স্পোরের মত কতগুলো শৃঙ্খলাবদ্ধ কনিডিয়া বা কনিডিওস্পোর গঠন করে বংশবৃদ্ধি করে । কনিডিয়া দ্বিভাজন প্রক্রিয়ায় অল্প সময়ে অসংখয ব্যাকটেরিয়ার জন্ম দেয় ।

১৬) গনিডিয়া কী ?

উত্তরঃ Leucothris জাতীয় সুত্রাকার ব্যাকটেরিয়ার প্রোটোপ্লাজম খন্ডিত হয়ে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ফ্লাজেলাযুক্ত গনিডিয়া উৎপন্ন করে ।

১৭) কনজুগেশন কী ?

উত্তরঃ গ্যামেট সৃষ্টি ব্যাতিরেকে দুটি ব্যাকটেরিয়ার প্রত্যক্ষ সংযুক্তির মাধযমে যে মিলন ঘটে তাকে কনজুগেশন বলে ।

১৮) পাইলাস কী ?

উত্তরঃ দাতা বযাকটেরিয়ামের জিনবাহি ফাঁপা সূত্রের মত গঠন ।

১৯) মেরোজাইগোট বলতে কি বুঝ ?

উত্তরঃ দাতা ব্যাকটেরিয়ামের ডিএনএ গহীতার দেহে সম্পূর্ণরূপে স্থানান্তরের পূর্বে বিচ্ছিন্ন হওয়ার ফলে গ্রহীতা কোষটি দাতা কোষের নিউক্লিও পর্দার অংশবিশেষ লাভ করে যে অসম্পূর্ণ জাইগোট গঠন করে তাকে মেরোজাইগোট বলে।

২০) ব্যাকটেরিয়া থেকে উৎপাদিত জীবন রক্ষাকারী অ্যান্টিবায়োটিকের নাম লিখ।

উত্তরঃ সাবটিলিন , পলিমিক্সিন , স্ট্রেপটোমাইসিন ইত্যাদি ।

২১) মাটির উর্বরাশক্তি বৃদ্ধিকারী ব্যাকটেরিয়ার নাম লিখ ।

উত্তরঃ Azotobacter , Pseudomonas,Clostridium প্রভৃতি।

২২) নাইট্রিফিকেশন বলতে কি বুঝ ?

উত্তরঃ অ্যামোনিয়াকে নাইট্রাইটে পরিনত করাকে নাইট্রিফিকেশন বলে । এ ক্ষেত্রে Nitrosomonnas , Nitrococcus ইত্যাদি স্থলজ ব্যাকটেরিয়া প্রথম ধাপে অ্যামোনিয়াকে নাইট্রেটে পরিনত করে এবং দ্বিতীয় ধাপে Nitrobacter নাইট্রেটকে নাইট্রাইটে পরিনত করে ।


Wednesday 28 November 2018

অণুজীব


১) অণুজীব বলতে কী বুঝ?
উত্তরঃ জীব জগতে যে সমস্ত জীবদের অণুবীক্ষণ যন্ত্র ছাড়া খালি চোখে দেখা যায় না , এই ধরনের জীবসমূহকে অণুজীব বলে আখ্যায়িত । যেমনঃ ভাইরাস , ব্যাকটেরিয়া ইত্যাদি।
২) ভাইরাসকে অকোষীয় বস্তু বলা হয় কেন?
উত্তরঃ ভাইরাস দেহ রাসায়নিকভাবে প্রোটিন ও নিউক্লিক এসিড দ্বারা গঠিত । এছাড়াও ভাইরাস দেহে কোষপ্রাচীর , কোষ ঝিল্লি , সাইটোপ্লাজম , বিভিন্ন সাইটোপ্লাজমীয় অঙ্গাণু  এবং নিউক্লিয়াস অনুপস্থিত । তাই ভাইরাসকে অকোষীয় বস্তু বলা হয়।
৩) পরজীবী বলতে কি বুঝ?
উত্তরঃ যেসব জীব জীবনধারণের জন্য আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে অন্যপ্রজাতির জীবের উপর নির্ভরশীল তাদেরকে পরজীবী বলে ।
৪) সুপ্তাবস্থা বলতে কি বুঝ?
উত্তরঃ কোন রোগের জীবাণু পোষকদেহে প্রবেশ করার পর থেকে রোগের লক্ষন প্রকাশ হওয়া পর্যন্ত সময়কালকে সুপ্তাবস্থা বলে ।
৫) ভিরিয়ন ও ভিরিয়য়েড বলতে কি বুঝায় ?
উত্তরঃ ভিরিয়নঃ নিউক্লিক এসিডকে ঘিরে অবস্থিত ক্যাপসিড সমন্বয়ে গঠিত একটি সংক্রমণক্ষম সম্পূর্ণ ভাইরাস কণাকে ভিরিয়ন বলে।
ভিরিয়য়েডঃ এক সূত্রক বৃত্তাকার আর এন এ অণু যা কয়েকশত নিউক্লিওটাইড নিয়ে গঠিত , যা কেবলমাত্র উদ্ভিদ দেহেই পাওয়া যায় এবং উদ্ভিদ পোষকের এনজাইম ব্যবহার করে সংখ্যা বৃদ্ধি করে তাদের ভিরিয়য়েড বলে।
৬) ব্যাক্টেরিওফায বলতে কি বুঝ ?
উত্তরঃ যে সকল ভাইরাস ব্যাক্টেরিয়ার কোষাভ্যন্তরে বংশবৃদ্ধি ঘটিয়ে ব্যাকটেরিয়াকে ধবংস করে সেগুলোকে ব্যাক্টেরিওফাজ বা T2 ফাজ বলে ।
) এনভেলপ বলতে কি বুঝ ?
উটরঃ সাধারনত প্রানী ভাইরাসের ক্ষেত্রে  নিউক্লিওক্যাপসিড কণার বাইরে যে বহিরাবরণ থাকে তার নাম এনভেলপ
) ক্যাপসিড কী ?
উত্তরঃ ভাইরাস দেহের মধ্যভাগে নিউক্লিক এসিডকে ঘিরে থাকা প্রোটিন আবরনকে ক্যাপসিড বলে
) ক্যাপসোমিয়ার কী ?
উত্তরঃ প্রকৃতপক্ষে ক্যাপসিড অসংখ্য প্রোটিন সাব-ইউনিট বা উপ-একক নিয়ে গঠিত , এগুলোকে ক্যাপসোমিয়ার বলে
১০) নিউক্লিওয়েড বলতে কি বুঝ ?
উত্তরঃ ক্যাপসিড মধ্যস্থ নিউক্লিক এসিড যা একসূত্রক বা দ্বিসূত্রক ডিএনএ বা আরএনএ নিয়ে গঠিত ভাইরাসের বংশগতি বস্তু
১১) ভিরিয়ন কী ?
উত্তরঃ ক্যাপসিড আবরন দ্বারা আবৃত নিউক্লিক এসিড যুক্ত সংক্রমণ ক্ষমতা সম্পন্ন পূর্ণাঙ্গ ভাইরাস
১২) ভিরয়েড কী ?
উত্তরঃ আরএনএ খন্ডক নিয়ে গঠিত উদ্ভিদ ভাইরাস যা পোষকদেহে বংশবৃদ্ধি এবং রোগ সৃষ্টি করতে সক্ষম
১৪) প্রিয়ন কী ?
উত্তরঃ নিউক্লিক এসিডবিহীন প্রোটিন আবরন বিশিষ্ট ভাইরাস যা পোষক কোষের জিনোমে প্রবেশ করে নতুন প্রিয়ন সৃষ্টি করতে পারে এবং পোষক দেহে রোগ সৃষ্টি করতে পারে
১৫) পেলপোমিয়ার কী ?
উত্তরঃ এনভেলপের গঠনগত একককে পেলপোমিয়ার বলে
১৬) লাইটিক চক্র বলতে কি বুঝ ?
উত্তরঃ যে প্রক্রিয়ায় ফাজ ভাইরাস পোষক ব্যাকটেরিয়া কোষে প্রবেশ করে সংখ্যাবৃদ্ধি করে এবং অপত্য ভাইরাসগুলো পোষক দেহ বিদারণ করে বাহিরে মুক্ত হয় তাকে লাইটিক চক্র বলে E.coli  নামক ব্যাকটেরিয়ায় T2 ফাজ লাইটিক চক্রের মাধ্যমে সংখ্যাবৃদ্ধি করে।
১৭) লাইসোজেনিক চক্র বলতে কি বুঝ ?
উত্তরঃ যে প্রক্রিয়ার ফাজ ভাইরাস ব্যাকটেরিয়ার দেহে প্রবেশ করে ভাইরাল ডিএনএ টি ব্যাকটেরিয়াল ডিএনএ অণুর সংগে একত্রে  যুক্ত হয়ে  প্রতিলিপি গঠনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ ভাইরাস হিসাবে ব্যাকটেরিয়া কোষের বিদারণ ঘটিয়ে মুক্ত হয় না তাকে লাইসোজেনিক চক্র বলে।E.coli  ব্যাকটেরিয়া আক্রমনকারী ল্যামডা ফায এ লাইসোজেনিক চক্র দেখা যায়।
১৮) ভাইরাস বলতে কি বুঝ ?
উত্তরঃ নিউক্লিক এসিড ও প্রোটিন নিয়ে গঠিত অতি আণুবীক্ষণিক বস্তু যা জীবদেহের অভ্যন্তরে সক্রিয় হয়ে রোগ সৃষ্টি করে কিন্তু জীবদেহের বাইরে নিষ্ক্রিয় অবস্থায় থাকে তাকে ভাইরাস বলে।
১৯) ফায বলতে কি বুঝ ?
উত্তরঃ ফায একটি গ্রিক শব্দ যার অর্থ ভক্ষন করা । প্রকৃত অর্থে ফায হল ঐ সকল ভাইরাস যারা জীবিদেহে অবস্থিত রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়াকে ধবংস করে ।
২০) ইমাজিং ভাইরাস বলতে কি বুঝ ?
উত্তরঃ যেসব ভাইরাস আদি পোষক থেকে নতুন পোষক প্রজাতিতে রোগ সৃষ্টি করে তাদেরকে ইমাজিং ভাইরাস বলে।
২১) ভাইরাসকে অকোষীয় বস্তু বলা হয় কেন ?
উত্তরঃ ভাইরাস দেহে কোষপ্রাচীর , কোষ ঝিল্লি , সাইটোপ্লাজমীয় আঙ্গাণু এবং নিউক্লিয়াস নেই । এদের দেহ শুধুমাত্র রাসায়নিকভাবে প্রোটিন ও নিউক্লিক এসিড দ্বারা গিঠিত , এজন্য ভাইরাসকে অকোষীয় বস্তু বলা হয়।
২২) ইকলিপস কাল কী ?
উত্তরঃ পোষক ব্যাকটেরিয়াকে আক্রমণ করার পর থেকে যে সময় পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ অপ্ত্য ভাইরাস সৃষ্টি না হয় সেই সময়কালকে ইকলিপস কাল বলে ।
২৩) ট্রান্সমিশন কী ?
উত্তরঃ উদ্ভিদ ও প্রাণিদেহে বিভিন্ন মাধ্যমের সহায়তায় ( যেমন ; বায়ু , পানি ,হাচি ,কাশি , বীজ , কীটপতপঙ্গ ইত্যাদি ) ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হওয়াকে ট্রান্সমিশন বলে ।
২৪) জন্ডিস কী ?
উত্তরঃ ভাইরাস হেপাটাইটিসের কারনে জন্ডিজ হয়ে থাকে ।
২৫) হেমোরেজিক ডেঙ্গু বলতে কি বুঝ ?
উত্তরঃ ডেঙ্গুজরের জটীলতা থেকে হেমোরেজিক হয়ে থাকে । এ অবস্থায় কয়েকদিন পরপর রোগীর নাক , মুখ , দাতের মাড়ি ও ত্বকের নিচে রক্তক্ষরন দেখা যায় । এছাড়াও রক্তের প্লাটিলেট খুব কমে যায় , রক্তবমি হয় এবং চোখে রক্ত জমাট বাধতে দেখা যায়।
২৬) নিউক্লিওক্যাপসিড কী ?
 উত্তরঃ ভাইরাসে নিউক্লিক অ্যাসিডের অণু প্রোটিনের সাথে যুক্ত হয়ে যে বিশেষ গঠন তৈরি করে ।
২৭) ভাইরাসকে জীব বলা যায় না কেন ?
উত্তরঃ জীব হতে হলে কোষীয় হতে হয় । কিন্তু ভাইরাসের দেহে কোষপর্দা ও প্রোটোপ্লাজম না থাকায় অকোষীয় । তাছাড়া সজীব কোষের বাইরে এদের কোন জীবনের লক্ষন প্রকাশ পায় না বা বংশবৃদ্ধি করতে পারে না ।
২৮) লাইসিস বলতে কি বুঝ ?
উত্তরঃ T2 ফাজের সংখ্যাবৃদ্ধির শেষ পর্যায়টি হচ্ছে লাইসিস ।এই পর্যায়ে ব্যাকটেরিয়া কোষ প্রাচীর বিগলনের মাধ্যমে নতুন T2 ফাযগুলো বাইরে উন্মুক্ত হয় ।
২৯) হেপাটাইটিস রোগের লক্ষন কী কী ?
উত্তরঃ ক) জ্বর , মাথা ব্যথা , ক্ষুধামন্দা ।
খ) অরুচি , বমি বমি ভাব ,দূর্বল বোধ ইত্যাদি
গ) প্রস্রাব হলুদ , চোখ ও হাতের তালু হলুদ , পেটে ও পায়ে পানি জমে ।
ঘ ) রোগের শেষ পর্যায়ে লিভার নষ্ট হয় এবং লিভার ক্যান্সার হয় ।
৩০) ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষঙ্গুলি কী কী ?
উত্তরঃ ক) হঠাৎ প্রচন্ড জ্বর ।
খ) তীব্র মাথা ব্যথা ও চোখের পেছনে ব্যথা ।
গ) কোমর , মাংসপেশীতে প্রচন্ড ব্যথা ।
ঘ) অনেক সময় দাতের মাড়ি ও নাক দিয়ে রক্তক্ষরন হয়।
৩১) হেপাটিক রোগের তীব্রতা কিভাবে নির্ণয় করা যায় ?
উত্তরঃ রক্তে বিলুরুবিনের পরিমাণ , এ এল টি , প্রোথোম্বিন টাইম , অ্যালবুমিন , আলট্রাসনোগাম  এবং ভাইরাস জীবাণু অণুসন্ধানের মাধ্যমে এই রোগের তীব্রতা নির্ণয় করা যায়।
৩২) রক্তের কণিকা দ্বারা কিভাবে ভাইরাসের রোগ নির্ণয় করা যায় ?
উত্তরঃ  ক)  রক্তের শ্বেতকণিকা ৪০,০০০/mm3 এর নিচে নেমে গেলে ।
খ) অনুচক্রিকার সংখ্যা ১,৫০,০০০/mm3 এর অনেক নিচে নেমে গেলে ।
গ) লিম্ফোসাইটের সংখ্যা ৩,৫০০/mm3 থেকে বৃদ্ধি পেলে ।
৩৩) অর্থনৈতিক ক্ষতিসাধন করে এমন দুটি ভাইরাসের নাম লিখ ।
উত্তরঃ  ক) Xymophage virus অ্যালকোহল শিল্পে ব্যবহৃত ঈস্টকে ধ্বংস করে।
 ৩৪) চিকুগুনিয়া রোগের বাহকের নাম ও লক্ষন ব্যাখ্যা কর ।
উত্তরঃ বাহক- ১) Aedes aegypti
                    2) Ades albopictus
লক্ষনঃ ক) প্রচন্ড জ্বর , বমি বমি ভাব , মাথাব্যথা ।
খ) শরীর দুর্বল হয়ে যায় এবং লাল র‍্যাশ দেখা দেয় ।
গ) মাংসপেশী , অস্থিসন্ধিতে তীব্র ব্যথা এবং ফুলে যাওয়া ।