১) অণুজীব বলতে কী বুঝ?
উত্তরঃ জীব জগতে যে সমস্ত জীবদের
অণুবীক্ষণ যন্ত্র ছাড়া খালি চোখে দেখা যায় না , এই ধরনের জীবসমূহকে অণুজীব বলে
আখ্যায়িত । যেমনঃ ভাইরাস , ব্যাকটেরিয়া ইত্যাদি।
২) ভাইরাসকে অকোষীয় বস্তু বলা হয়
কেন?
উত্তরঃ ভাইরাস দেহ রাসায়নিকভাবে
প্রোটিন ও নিউক্লিক এসিড দ্বারা গঠিত । এছাড়াও ভাইরাস দেহে কোষপ্রাচীর , কোষ
ঝিল্লি , সাইটোপ্লাজম , বিভিন্ন সাইটোপ্লাজমীয় অঙ্গাণু এবং নিউক্লিয়াস অনুপস্থিত । তাই ভাইরাসকে
অকোষীয় বস্তু বলা হয়।
৩) পরজীবী বলতে কি বুঝ?
উত্তরঃ যেসব জীব জীবনধারণের জন্য আংশিক
বা সম্পূর্ণভাবে অন্যপ্রজাতির জীবের উপর নির্ভরশীল তাদেরকে পরজীবী বলে ।
৪) সুপ্তাবস্থা বলতে কি বুঝ?
উত্তরঃ কোন রোগের জীবাণু পোষকদেহে
প্রবেশ করার পর থেকে রোগের লক্ষন প্রকাশ হওয়া পর্যন্ত সময়কালকে সুপ্তাবস্থা বলে ।
৫) ভিরিয়ন ও ভিরিয়য়েড বলতে কি
বুঝায় ?
উত্তরঃ ভিরিয়নঃ নিউক্লিক এসিডকে ঘিরে
অবস্থিত ক্যাপসিড সমন্বয়ে গঠিত একটি সংক্রমণক্ষম সম্পূর্ণ ভাইরাস কণাকে ভিরিয়ন
বলে।
ভিরিয়য়েডঃ এক সূত্রক বৃত্তাকার আর এন এ
অণু যা কয়েকশত নিউক্লিওটাইড নিয়ে গঠিত , যা কেবলমাত্র উদ্ভিদ দেহেই পাওয়া যায় এবং
উদ্ভিদ পোষকের এনজাইম ব্যবহার করে সংখ্যা বৃদ্ধি করে তাদের ভিরিয়য়েড বলে।
৬) ব্যাক্টেরিওফায বলতে কি বুঝ ?
উত্তরঃ যে সকল ভাইরাস ব্যাক্টেরিয়ার
কোষাভ্যন্তরে বংশবৃদ্ধি ঘটিয়ে ব্যাকটেরিয়াকে ধবংস করে সেগুলোকে ব্যাক্টেরিওফাজ বা T2
ফাজ বলে ।
৭)
এনভেলপ বলতে কি বুঝ ?
উটরঃ সাধারনত প্রানী ভাইরাসের ক্ষেত্রে নিউক্লিওক্যাপসিড কণার বাইরে যে
বহিরাবরণ থাকে তার নাম এনভেলপ।
৮)
ক্যাপসিড কী ?
উত্তরঃ ভাইরাস দেহের মধ্যভাগে নিউক্লিক
এসিডকে ঘিরে থাকা প্রোটিন আবরনকে ক্যাপসিড বলে ।
৯)
ক্যাপসোমিয়ার কী ?
উত্তরঃ প্রকৃতপক্ষে ক্যাপসিড অসংখ্য প্রোটিন
সাব-ইউনিট বা উপ-একক নিয়ে গঠিত , এগুলোকে ক্যাপসোমিয়ার বলে।
১০) নিউক্লিওয়েড বলতে কি বুঝ ?
উত্তরঃ ক্যাপসিড মধ্যস্থ নিউক্লিক এসিড
যা একসূত্রক বা দ্বিসূত্রক ডিএনএ বা আরএনএ নিয়ে গঠিত ভাইরাসের বংশগতি বস্তু ।
১১) ভিরিয়ন কী ?
উত্তরঃ ক্যাপসিড আবরন দ্বারা আবৃত নিউক্লিক
এসিড যুক্ত সংক্রমণ ক্ষমতা সম্পন্ন পূর্ণাঙ্গ ভাইরাস।
১২) ভিরয়েড কী ?
উত্তরঃ আরএনএ খন্ডক নিয়ে গঠিত উদ্ভিদ ভাইরাস
যা পোষকদেহে বংশবৃদ্ধি এবং রোগ সৃষ্টি করতে সক্ষম।
১৪) প্রিয়ন কী ?
উত্তরঃ নিউক্লিক এসিডবিহীন প্রোটিন আবরন
বিশিষ্ট ভাইরাস যা পোষক কোষের জিনোমে প্রবেশ করে নতুন প্রিয়ন সৃষ্টি করতে পারে এবং
পোষক দেহে রোগ সৃষ্টি করতে পারে।
১৫) পেলপোমিয়ার কী ?
উত্তরঃ এনভেলপের গঠনগত একককে পেলপোমিয়ার
বলে ।
১৬) লাইটিক চক্র বলতে কি বুঝ ?
উত্তরঃ যে প্রক্রিয়ায় ফাজ ভাইরাস পোষক ব্যাকটেরিয়া
কোষে প্রবেশ করে সংখ্যাবৃদ্ধি করে এবং অপত্য ভাইরাসগুলো পোষক দেহ বিদারণ করে বাহিরে
মুক্ত হয় তাকে লাইটিক চক্র বলে।
E.coli নামক ব্যাকটেরিয়ায় T2 ফাজ লাইটিক চক্রের মাধ্যমে সংখ্যাবৃদ্ধি করে।
১৭)
লাইসোজেনিক চক্র বলতে কি বুঝ ?
উত্তরঃ যে প্রক্রিয়ার ফাজ ভাইরাস
ব্যাকটেরিয়ার দেহে প্রবেশ করে ভাইরাল ডিএনএ টি ব্যাকটেরিয়াল ডিএনএ অণুর সংগে
একত্রে যুক্ত হয়ে প্রতিলিপি গঠনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ ভাইরাস
হিসাবে ব্যাকটেরিয়া কোষের বিদারণ ঘটিয়ে মুক্ত হয় না তাকে লাইসোজেনিক চক্র বলে।E.coli ব্যাকটেরিয়া আক্রমনকারী ল্যামডা ফায এ
লাইসোজেনিক চক্র দেখা যায়।
১৮) ভাইরাস
বলতে কি বুঝ ?
উত্তরঃ নিউক্লিক এসিড ও প্রোটিন নিয়ে
গঠিত অতি আণুবীক্ষণিক বস্তু যা জীবদেহের অভ্যন্তরে সক্রিয় হয়ে রোগ সৃষ্টি করে
কিন্তু জীবদেহের বাইরে নিষ্ক্রিয় অবস্থায় থাকে তাকে ভাইরাস বলে।
১৯) ফায
বলতে কি বুঝ ?
উত্তরঃ ফায একটি গ্রিক শব্দ যার অর্থ
ভক্ষন করা । প্রকৃত অর্থে ফায হল ঐ সকল ভাইরাস যারা জীবিদেহে অবস্থিত রোগ
সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়াকে ধবংস করে ।
২০) ইমাজিং ভাইরাস বলতে কি বুঝ ?
উত্তরঃ যেসব ভাইরাস আদি পোষক থেকে নতুন
পোষক প্রজাতিতে রোগ সৃষ্টি করে তাদেরকে ইমাজিং ভাইরাস বলে।
২১) ভাইরাসকে অকোষীয় বস্তু বলা হয় কেন
?
উত্তরঃ ভাইরাস দেহে কোষপ্রাচীর , কোষ
ঝিল্লি , সাইটোপ্লাজমীয় আঙ্গাণু এবং নিউক্লিয়াস নেই । এদের দেহ শুধুমাত্র
রাসায়নিকভাবে প্রোটিন ও নিউক্লিক এসিড দ্বারা গিঠিত , এজন্য ভাইরাসকে অকোষীয় বস্তু
বলা হয়।
২২) ইকলিপস কাল কী ?
উত্তরঃ পোষক ব্যাকটেরিয়াকে আক্রমণ করার
পর থেকে যে সময় পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ অপ্ত্য ভাইরাস সৃষ্টি না হয় সেই সময়কালকে ইকলিপস
কাল বলে ।
২৩) ট্রান্সমিশন কী ?
উত্তরঃ উদ্ভিদ ও প্রাণিদেহে বিভিন্ন
মাধ্যমের সহায়তায় ( যেমন ; বায়ু , পানি ,হাচি ,কাশি , বীজ , কীটপতপঙ্গ ইত্যাদি )
ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হওয়াকে ট্রান্সমিশন বলে ।
২৪) জন্ডিস কী ?
উত্তরঃ ভাইরাস হেপাটাইটিসের কারনে
জন্ডিজ হয়ে থাকে ।
২৫) হেমোরেজিক ডেঙ্গু বলতে কি বুঝ
?
উত্তরঃ ডেঙ্গুজরের জটীলতা থেকে
হেমোরেজিক হয়ে থাকে । এ অবস্থায় কয়েকদিন পরপর রোগীর নাক , মুখ , দাতের মাড়ি ও
ত্বকের নিচে রক্তক্ষরন দেখা যায় । এছাড়াও রক্তের প্লাটিলেট খুব কমে যায় , রক্তবমি
হয় এবং চোখে রক্ত জমাট বাধতে দেখা যায়।
২৬) নিউক্লিওক্যাপসিড কী ?
উত্তরঃ ভাইরাসে নিউক্লিক অ্যাসিডের অণু
প্রোটিনের সাথে যুক্ত হয়ে যে বিশেষ গঠন তৈরি করে ।
২৭) ভাইরাসকে জীব বলা যায় না কেন ?
উত্তরঃ জীব হতে হলে কোষীয় হতে হয় ।
কিন্তু ভাইরাসের দেহে কোষপর্দা ও প্রোটোপ্লাজম না থাকায় অকোষীয় । তাছাড়া সজীব
কোষের বাইরে এদের কোন জীবনের লক্ষন প্রকাশ পায় না বা বংশবৃদ্ধি করতে পারে না ।
২৮) লাইসিস বলতে কি বুঝ ?
উত্তরঃ T2 ফাজের সংখ্যাবৃদ্ধির শেষ পর্যায়টি হচ্ছে লাইসিস ।এই পর্যায়ে
ব্যাকটেরিয়া কোষ প্রাচীর বিগলনের মাধ্যমে নতুন T2 ফাযগুলো
বাইরে উন্মুক্ত হয় ।
২৯) হেপাটাইটিস রোগের লক্ষন কী কী
?
উত্তরঃ ক) জ্বর , মাথা ব্যথা ,
ক্ষুধামন্দা ।
খ) অরুচি , বমি বমি ভাব ,দূর্বল বোধ
ইত্যাদি ।
গ) প্রস্রাব হলুদ , চোখ ও হাতের তালু
হলুদ , পেটে ও পায়ে পানি জমে ।
ঘ ) রোগের শেষ পর্যায়ে লিভার নষ্ট হয়
এবং লিভার ক্যান্সার হয় ।
৩০) ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষঙ্গুলি কী
কী ?
উত্তরঃ ক) হঠাৎ প্রচন্ড জ্বর ।
খ) তীব্র মাথা ব্যথা ও চোখের পেছনে
ব্যথা ।
গ) কোমর , মাংসপেশীতে প্রচন্ড ব্যথা ।
ঘ) অনেক সময় দাতের মাড়ি ও নাক দিয়ে
রক্তক্ষরন হয়।
৩১) হেপাটিক রোগের তীব্রতা কিভাবে
নির্ণয় করা যায় ?
উত্তরঃ রক্তে বিলুরুবিনের পরিমাণ , এ
এল টি , প্রোথোম্বিন টাইম , অ্যালবুমিন , আলট্রাসনোগাম এবং ভাইরাস জীবাণু অণুসন্ধানের মাধ্যমে এই রোগের
তীব্রতা নির্ণয় করা যায়।
৩২) রক্তের কণিকা দ্বারা কিভাবে
ভাইরাসের রোগ নির্ণয় করা যায় ?
উত্তরঃ ক)
রক্তের শ্বেতকণিকা ৪০,০০০/mm3
এর নিচে নেমে গেলে ।
খ) অনুচক্রিকার সংখ্যা ১,৫০,০০০/mm3 এর অনেক নিচে নেমে গেলে ।
গ) লিম্ফোসাইটের সংখ্যা ৩,৫০০/mm3
থেকে বৃদ্ধি পেলে ।
৩৩) অর্থনৈতিক ক্ষতিসাধন করে এমন
দুটি ভাইরাসের নাম লিখ ।
উত্তরঃ ক) Xymophage virus অ্যালকোহল শিল্পে ব্যবহৃত ঈস্টকে ধ্বংস করে।
৩৪) চিকুগুনিয়া রোগের বাহকের নাম ও লক্ষন
ব্যাখ্যা কর ।
উত্তরঃ বাহক- ১) Aedes
aegypti
2) Ades albopictus
লক্ষনঃ ক) প্রচন্ড জ্বর , বমি বমি ভাব
, মাথাব্যথা ।
খ) শরীর দুর্বল হয়ে যায় এবং লাল র্যাশ
দেখা দেয় ।
গ) মাংসপেশী , অস্থিসন্ধিতে তীব্র
ব্যথা এবং ফুলে যাওয়া ।
No comments:
Post a Comment