সূত্রক নিক্ষেপের কৌশল
১ ক্যাপসুল ও সুত্রক
অঞ্চল নিয়ে নেমাটোসিস্ট গঠিত।
২ স্বাভাবিক অবস্থায়
সুত্রক্টি ক্যাপসুলের ভেতরের তরলে প্যাচানো ভাবে থাকে।
৩ শুধুমাত্র উদ্দীপনার
ভিত্তিতে সুত্রক্টি বাইরে নিক্ষিপ্ত হয়।
৪ ক্যাপসুলের তরলে
বিভিন্ন ধরনের আয়ন,অ্যামিনো এসিড ও প্রোটিন থাকে।
৫ রাসায়নিক বা
যান্ত্রিক উদ্দীপনার কারনে আয়নগুলো প্রোটিন থেকে বিমুক্ত হয়।
৬ ফলে ক্যাপসুলের
প্রাচীরের ভেদ্যতা বেড়ে যায় এবং পানি দ্রুত ক্যাপসুলের ভিতরে প্রবেশ করে।
৭ যার কারনে
ক্যাপসুলের ভেতরের অভিশ্রবনিক চাপ বেড়ে যায়।
৮ কারন ক্যাপসুলের
চারিদিকের মাইক্রোফাইব্রিলগুলোর সংকোচন অভিস্রবনিক চাপ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
৯ এভাবে অভিস্রবনিক
চাপ বৃদ্ধির ফলে নেমাটোসিস্টের অপারকুলাম খুলে যায়।
১০ ফলে নেমাটোসিস্টের
সুত্রক ক্যাপসুল থেকে দ্রুত বাইরে নিক্ষিপ্ত হয়।
১১ নেমাটোসিস্টের
সুত্রক নিক্ষেপের পর নিডোব্লাস্টটি খাদ্য বস্তুর সাথে পাচিত হয়ে যায়।
১২ ৪৮ ঘন্টার মধ্যে
ইন্টারস্টিশিয়াল কোষ থেকে নতুন নিডোব্লাস্ট কোষের সৃষ্টি হয়।
মনে রাখা প্রয়োজন,একটি
নিডোব্লাস্ট থেকে শুধুমাত্র একবারই একটি নেমাটোসিস্ট নিক্ষিপ্ত হতে পারে।
খাদ্য গ্রহন ও পরিপাক
যে পুষ্টি প্রক্রিয়ায়
প্রাণী নিজের খাদ্য নিজে তৈরীতে অক্ষম এবং বিভিন্ন প্রকার জটিল খাদ্য
গলাধঃকরনে সক্ষম তাকে
হলোজয়িক পুষ্টি বলে।হলোজয়িক পুষ্টি সাধারনত তিনটি ধাপের
মাধ্যমে সম্পন্ন হয়ঃ
a. খাদ্য গ্রহনঃ
১. ক্ষুদার্থ হাইড্রা
খাদ্য শিকারের জন্য পাদচাকতির সাহায্যে উল্টাভাবে ঝুলে থেকে কর্ষিকাগুলো পানিতে
ভাসিয়ে রাখে।
২. কোন সজীব খাদ্য
বস্তু কর্ষিকার স্নগস্পশে এলে ভলভেন্ট নেমাটোসিস্টের সাহায্যে বস্তুকে প্যাচিয়ে
ধরে।
৩. গ্লুটিনেন্ট
নেমাটোসিস্ট আথালো পদার্থ নিঃসরনের মাধ্যমে বস্তুটিকে আরও মজবুত ভাবে পেচাতে
সাহায্য করে।
৪. পেনিট্রান্ট
নেমাটোসিস্ট বস্তুর দেহে বিদ্ধ হয়ে হিপনোটক্সিন শিকারের দেহে প্রবেশ করিয়ে শিকারকে
মেরে ফেলে।
৫. কর্ষিকাগুলো বক্র
হয়ে শিকারকে মুখছিদ্রের কাছে নিয়ে এলে মুখছিদ্র ও হাইপোস্টোম আকারে বৃদ্ধি পায়।
৬. মুখ ছিদ্রের
চারিদিকের গ্রন্থিকোষ থেকে মিউকাস নিঃসরনের মাধ্যমে মুখছিদ্রকে পিচ্ছিল করে।
৭. হাইপোস্টোম সংকোচন
ও প্রসারনের ফলে খাদ্যবস্তু মুখছিদ্র থেকে হাইপোস্টোম পথে গলাধঃকরন সম্পন্ন হয়।
b. খাদ্য পরিপাকঃ
যে জৈবনিক প্রক্রিয়ায়
খাদ্যবস্তু বিভিন্ন এনজাইমের কার্যকারিতায় আত্তীকরন উপযোগী অবস্থায় উপনীত হয়
তাকে পরিপাক বলে।হাইড্রার
পরিপাক সাধারন্ত দুই ধরনের-
ক) বহিকোষীয় পরিপাকঃ
১. গলাধকৃত খাদ্য
সিলেন্টেরনের তরলের সংস্পর্শে এসে সিক্ত ও নরম হয়।
২. দেহপ্রাচীরের
সংকোচন-প্রসারনের ফলে খাদ্য চূর্ন-বিচূর্ন হয়।
৩. সাইটোপ্লাজম নিঃসৃত
হাইডড়োক্লোরিক এসিডের মাধ্যমে জীবাণুমূক্ত ও অম্লীয় হয়।
৪. অতপর এপিডার্মিসের
গ্রন্থিকোষ নিঃসৃত পেপ্সিন এনজাইম আমিষকে পাচিত করে।
৫. পাচিত আমিষ পরে
পেপটোন,প্রোটিওজ ও পলিপেপটাইডে পরিনত হয়।
এ পর্যায়টি
এন্ডোডার্মিসের বাহিরে সিলেন্টেরনে ঘটে বলে একে বহিঃকোষীয় পরিপাক বলে।
খ) অন্তঃকোষীয় পরিপাকঃ
১. ক্ষনপদ যক্ত
এন্ডোডার্মিসের পাশিকোষগুলো খাদ্যকনাকে ঘিরে ক্ষনপদ বিস্তার করে ফ্যাগোসাইটোসিস
প্রক্রিয়ায়
খাদ্য গহবরে আবদ্ধ
করে।
২. সাইটোপ্লাজম থেকে
ক্ষারীয় রস ও বিভিন্ন এনজাইম নিঃসৃত হয়ে খাদ্য পরিপাকে অংশ নেয়।
৩. ট্রিপসিন নামক
এনজাইম পেপটোন, প্রোটিওজ ও পলিপেপটাইডকে অ্যামিনোএসিডে পরিনত করে।
লাইপেজ স্নেহকে ফ্যাটি
এসিড ও গ্লিসারলে পরিনত করে।
৪. অ্যামাইলেজ
শর্করাকে গ্লুকোজে পরিনত করে।
এই প্ররযায়টি কোষের
অভ্যন্তরে ঘটে বলে একে অন্তঃকোষীয় পরিপাক বলে।
c. বহিষ্করনঃ
১. পরিপাকের ফলে
ব্যাপন প্রক্রিয়ায় খাদ্যসার দেহের সর্বত্র পৌছে।
২. হাইড্রা সাধারনত
শ্বেতসার জাতীয় খাদ্য পরিপাকে অক্ষম।
৩. গ্যাস্ট্রোডার্মিসের
খাদ্যগহবর যুক্ত কিছু কোষ স্থানচ্যুত হয়ে দেহের বিভিন্ন অঞ্চলে
খাদ্যসার পরিবহনে সহায়তা
করে।
৪. হাইড্রার দেহের
পেশিসংকোচনের কারনে খাদ্যের অপাচ্য অংশ মুখছিদ্রের মাধ্যমে
দেহ থেকে বহিষ্কৃত হয়।
জেনে রাখা ভাল যে,
হাইড্রা সাধারনত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কীটপতঙ্গ, লার্ভা, ক্রাস্টেসিয়া, নেমাটোড,
রটিফার, অ্যানিলিডা, মাছের ডিম, মাছের ক্ষুদ্র পোনা, ট্যাডপোল লার্ভা ইত্যাদি
খাদ্য হিসাবে গ্রহন করে থাকে।
No comments:
Post a Comment