Pages

Tuesday, 1 July 2014

Locomotion in Hydra

Hydra এর চলন

প্রতিটি প্রাণীকে খাদ্য গ্রহন , আত্বরক্ষা এবং প্রজননের জন্য এক স্থান হতে অন্য স্থানে
স্থানান্তরিত হতে হয়।হাইড্রাও এর ব্যাতীক্রম নয় কিন্তু হাইড্রার  সুনির্দিষ্ট কোন
চলন অঙ্গ নেই।হাইদড়ার দেহপ্রাচীর, কর্ষিকা ও ভেসাল ডিস্ক চলনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা
পালন করে।নিম্নে হাইড্রার চলন প্রক্রিয়া আলোচনা করা হলঃ
Somersaulting:

এই প্রক্রিয়ায় হাইড্রা প্রথমে টার দেহকে গতিপথের দিকে বাকিয়ে চলন তলের কাছাকাছি নিয়ে আসে।
পরে কর্ষীকার সাহায্যে চলন তলকে আকড়ে ধরে লুপ সৃষ্টি করে।
অতপর বেসাল ডিস্ককে চলন তল থেকে মুক্ত করে কর্ষিকার উপর ভর দিয়ে উল্টাভাবে দাঁড়ায়।
অতঃপর বেসাল ডিস্ক অংশকে গতিপথের দিকে বাকিয়ে চলন তলকে পুনরায় আকড়ে ধরে লুপ তৈরি করে।
পরবর্তীতে কর্শিকাসমুহকে চলন তল থেকে মুক্ত করে ভেসাল ডিস্কের উপর ভর দিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়ায়।
এই ভাবে ডিগবাজী পদ্ধতিতে হাইড্রা দ্রুত চলন সম্পন্ন করে।
Looping:

এই প্রক্রিয়ায় হাইড্রা প্রথমে দেহকে বাকিয়ে কর্ষিকার সাহায্যে চলন তলকে আকড়ে ধরে।
পরবর্তীতে লুপ অবস্থায় বেসাল ডিস্ককে চলন তল থেকে মুক্ত করে হাইপোস্টোমের কাছে চলন তলকে আটকে ধরে।
অতঃপর হাইড্রা কর্ষিকা সমুহকে চলন তল থেকে মুক্ত করে ভেসাল ডীস্কের উপর ভর করে সোজা হয়ে দাঁড়ায়।
এই প্রক্রিয়ায় হাইদড়া খুব ধীরে ধীরে চলতে থাকে।সবসময় লুপিং অবস্থায় চলে বলে একে লুপিঙ্গ চলন বলে।
Amoeboid or Gliding:

কোন মসৃন তলবিশিষ্ট স্বল্প দূরত্ব অতিক্রমকালে পাদচাকতির এপিডার্মিসের গ্রন্থিকোষ থেকে মিউকাস নিঃসৃত করে।
অতঃপর পেশি আবরনী কোষের মায়োনিম চলনের দিক বরাবর সম্প্রসারিত হয়।
যার ফলে ক্ষনপদের ন্যায় উপবৃদ্ধি সৃষ্টি হয় এবং পাদচাকতিটি সামনের দিকে এগিয়ে যায়।
এই ধরনের চলন অ্যামিবার চলনের সাথে সাদৃশ্য বলে একে অ্যামিবয়েড চলন বলে।
Swimming:

অনেক সময় পাদচাকতিকে ধারক তল থেকে বিমুক্ত করে দেহকে পানিতে ভাসিয়ে দেয়।
কর্ষিকাগুলো ডান ও বাম দিক বরাবর পানিতে আঘাত হানে এবং ডেউয়ের সৃষ্টি করে।
ফলে হাইড্রা গমন পথের দিকে অগ্রসর হয়,এরুপ চলনে দেহ ও কর্ষিকা বিশেষ ভাবে সহায়তা করে।
Climbing:

পানিতে নিমজ্জিত কোন অবলম্বনে ওঠা নামার জন্য হাইড্রা প্রথমে কর্ষিকা দ্বারা অবলম্বনকে স্পর্শ করে।
স্পর্শ করা মাত্র গ্লুটিনেন্ট নেমাটোসিস্ট নিক্ষিপ্ত হয়ে অবলম্বনকে আকড়ে ধরে।
অতঃপর কর্ষিকার দিক বরাবর মায়োনিম সংকোচিত হয় এবং পাদচাকতি অবলম্বন থেকে বিমুক্ত হয়।
ফলে দেহ বাকা হয় এবং পাদচাকতি কর্ষিকার ঠিক পিছনে পুনঃস্থাপিত হয়।
এভাবে হাইড্রা উপর থেকে নিচে আবার নিচ থেকে উপরে আরোহন করে।
Floating:

মাঝে মাঝে হাইড্রা পাদচাকতির এপিডার্মিসের গ্রন্থিকোষ থেকে মিউকাস নিঃসৃত হয়ে বুদবুদের আকারে
পরিনত হয়।
ফলে হাইড্রা অবলম্বন থেকে বিমুক্ত হয়ে পানির উপরিতলে ভেসে উঠে।
বুদবুদগুলি ফেটে গেলে মিউকাস সুত্রক ভেলার মত কাজ করে এবং হাইড্রা কিছুদুর পর্যন্ত ভেসে যেতে পারে।
Body Contraction and Expansion:

অনেক সময় হাইড্রা পাদচাকতিকে অবলম্বন থেকে মুক্ত করে এপিডার্মিসের মায়োনিমগুলোর সংকোচন ও
প্রসারনের মাধ্যমে স্বল্প দূরত্ব অতিক্রম করে।
Spiral movement:

এই প্রক্রিয়ায় হাইড্রা টার দেহ প্রাচীরের এক পাশের কোষগুলোর সংকোচন এবং বিপরীত পার্শের
কোষগুলোর প্রসারনের মাধ্যমে সাপের মত এক ধরনের চলন সম্পন্ন করে।



Sunday, 29 June 2014

Mechanism of Discharge of Nematocyst and Intaking and Digestion of food of Hydra

সূত্রক নিক্ষেপের কৌশল


১ ক্যাপসুল ও সুত্রক অঞ্চল নিয়ে নেমাটোসিস্ট গঠিত।
২ স্বাভাবিক অবস্থায় সুত্রক্টি ক্যাপসুলের ভেতরের তরলে প্যাচানো ভাবে থাকে।
৩ শুধুমাত্র উদ্দীপনার ভিত্তিতে সুত্রক্টি বাইরে নিক্ষিপ্ত হয়।
৪ ক্যাপসুলের তরলে বিভিন্ন ধরনের আয়ন,অ্যামিনো এসিড ও প্রোটিন থাকে।
৫ রাসায়নিক বা যান্ত্রিক উদ্দীপনার কারনে আয়নগুলো প্রোটিন থেকে বিমুক্ত হয়।
৬ ফলে ক্যাপসুলের প্রাচীরের ভেদ্যতা বেড়ে যায় এবং পানি দ্রুত ক্যাপসুলের ভিতরে প্রবেশ করে।
৭ যার কারনে ক্যাপসুলের ভেতরের অভিশ্রবনিক চাপ বেড়ে যায়।
৮ কারন ক্যাপসুলের চারিদিকের মাইক্রোফাইব্রিলগুলোর সংকোচন অভিস্রবনিক চাপ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
৯ এভাবে অভিস্রবনিক চাপ বৃদ্ধির ফলে নেমাটোসিস্টের অপারকুলাম খুলে যায়।
১০ ফলে নেমাটোসিস্টের সুত্রক ক্যাপসুল থেকে দ্রুত বাইরে নিক্ষিপ্ত হয়।
১১ নেমাটোসিস্টের সুত্রক নিক্ষেপের পর নিডোব্লাস্টটি খাদ্য বস্তুর সাথে পাচিত হয়ে যায়।
১২ ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ইন্টারস্টিশিয়াল কোষ থেকে নতুন নিডোব্লাস্ট কোষের সৃষ্টি হয়।
মনে রাখা প্রয়োজন,একটি নিডোব্লাস্ট থেকে শুধুমাত্র একবারই একটি নেমাটোসিস্ট নিক্ষিপ্ত হতে পারে।

খাদ্য গ্রহন ও পরিপাক
যে পুষ্টি প্রক্রিয়ায় প্রাণী নিজের খাদ্য নিজে তৈরীতে অক্ষম এবং বিভিন্ন প্রকার জটিল খাদ্য
গলাধঃকরনে সক্ষম তাকে হলোজয়িক পুষ্টি বলে।হলোজয়িক পুষ্টি সাধারনত তিনটি ধাপের
মাধ্যমে সম্পন্ন হয়ঃ
a. খাদ্য গ্রহনঃ

১. ক্ষুদার্থ হাইড্রা খাদ্য শিকারের জন্য পাদচাকতির সাহায্যে উল্টাভাবে ঝুলে থেকে কর্ষিকাগুলো পানিতে ভাসিয়ে রাখে।
২. কোন সজীব খাদ্য বস্তু কর্ষিকার স্নগস্পশে এলে ভলভেন্ট নেমাটোসিস্টের সাহায্যে বস্তুকে প্যাচিয়ে ধরে।
৩. গ্লুটিনেন্ট নেমাটোসিস্ট আথালো পদার্থ নিঃসরনের মাধ্যমে বস্তুটিকে আরও মজবুত ভাবে পেচাতে সাহায্য করে।
৪. পেনিট্রান্ট নেমাটোসিস্ট বস্তুর দেহে বিদ্ধ হয়ে হিপনোটক্সিন শিকারের দেহে প্রবেশ করিয়ে শিকারকে মেরে ফেলে।
৫. কর্ষিকাগুলো বক্র হয়ে শিকারকে মুখছিদ্রের কাছে নিয়ে এলে মুখছিদ্র ও হাইপোস্টোম আকারে বৃদ্ধি পায়।
৬. মুখ ছিদ্রের চারিদিকের গ্রন্থিকোষ থেকে মিউকাস নিঃসরনের মাধ্যমে মুখছিদ্রকে পিচ্ছিল করে।
৭. হাইপোস্টোম সংকোচন ও প্রসারনের ফলে খাদ্যবস্তু মুখছিদ্র থেকে হাইপোস্টোম পথে গলাধঃকরন সম্পন্ন হয়।

b. খাদ্য পরিপাকঃ
যে জৈবনিক প্রক্রিয়ায় খাদ্যবস্তু বিভিন্ন এনজাইমের কার্যকারিতায় আত্তীকরন উপযোগী অবস্থায় উপনীত হয়
তাকে পরিপাক বলে।হাইড্রার পরিপাক সাধারন্ত দুই ধরনের-
ক) বহিকোষীয় পরিপাকঃ
১. গলাধকৃত খাদ্য সিলেন্টেরনের তরলের সংস্পর্শে এসে সিক্ত ও নরম হয়।
২. দেহপ্রাচীরের সংকোচন-প্রসারনের ফলে খাদ্য চূর্ন-বিচূর্ন হয়।
৩. সাইটোপ্লাজম নিঃসৃত হাইডড়োক্লোরিক এসিডের মাধ্যমে জীবাণুমূক্ত ও অম্লীয় হয়।
৪. অতপর এপিডার্মিসের গ্রন্থিকোষ নিঃসৃত পেপ্সিন এনজাইম আমিষকে পাচিত করে।
৫. পাচিত আমিষ পরে পেপটোন,প্রোটিওজ ও পলিপেপটাইডে পরিনত হয়।
এ পর্যায়টি এন্ডোডার্মিসের বাহিরে সিলেন্টেরনে ঘটে বলে একে বহিঃকোষীয় পরিপাক বলে।


খ) অন্তঃকোষীয় পরিপাকঃ
১. ক্ষনপদ যক্ত এন্ডোডার্মিসের পাশিকোষগুলো খাদ্যকনাকে ঘিরে ক্ষনপদ বিস্তার করে ফ্যাগোসাইটোসিস প্রক্রিয়ায়
খাদ্য গহবরে আবদ্ধ করে।
২. সাইটোপ্লাজম থেকে ক্ষারীয় রস ও বিভিন্ন এনজাইম নিঃসৃত হয়ে খাদ্য পরিপাকে অংশ নেয়।
৩. ট্রিপসিন নামক এনজাইম পেপটোন, প্রোটিওজ ও পলিপেপটাইডকে অ্যামিনোএসিডে পরিনত করে।
লাইপেজ স্নেহকে ফ্যাটি এসিড ও গ্লিসারলে পরিনত করে।
৪. অ্যামাইলেজ শর্করাকে গ্লুকোজে পরিনত করে।
এই প্ররযায়টি কোষের অভ্যন্তরে ঘটে বলে একে অন্তঃকোষীয় পরিপাক বলে।


c. বহিষ্করনঃ
১. পরিপাকের ফলে ব্যাপন প্রক্রিয়ায় খাদ্যসার দেহের সর্বত্র পৌছে।
২. হাইড্রা সাধারনত শ্বেতসার জাতীয় খাদ্য পরিপাকে অক্ষম।
৩. গ্যাস্ট্রোডার্মিসের খাদ্যগহবর যুক্ত কিছু কোষ স্থানচ্যুত হয়ে দেহের বিভিন্ন অঞ্চলে
খাদ্যসার পরিবহনে সহায়তা করে।
৪. হাইড্রার দেহের পেশিসংকোচনের কারনে খাদ্যের অপাচ্য অংশ মুখছিদ্রের মাধ্যমে
দেহ থেকে বহিষ্কৃত হয়।

জেনে রাখা ভাল যে, হাইড্রা সাধারনত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কীটপতঙ্গ, লার্ভা, ক্রাস্টেসিয়া, নেমাটোড, রটিফার, অ্যানিলিডা, মাছের ডিম, মাছের ক্ষুদ্র পোনা, ট্যাডপোল লার্ভা ইত্যাদি খাদ্য হিসাবে গ্রহন করে থাকে।

Thursday, 26 June 2014

Nidoblast cell and Nematosist


নিডারিয়া পর্বের সকল প্রানীর এপিডার্মিসের পেশী-আবরনী কোষের ফাকে ফাকে নিডোব্লাস্ট কোষ অবস্থান করে।কর্ষিকাতে এদের সংখ্যা সর্বাধিক এবং পদতলে অনুপস্থিত। কর্ষীকার স্থানে স্থানে ১০-১২টি নিডোব্লাস্ট কোষ একত্রে থেকে স্ফীত অংশ তৈরী করে,একে নিমাটোসিস্ট বেটারি বলে।নিডোব্লাস্ট কোষ দেখতে গোলাকার,ডিম্বাকার,নাশপাতি বা পেয়ালা আকৃতির হয়ে থাকে।একটি নিডোব্লাস্ট কোষ নিন্মলিখিত অংশগুলি নিয়ে গঠিতঃ

১)Cell Covering:
প্রতিটি কোষ দুইস্তর বিশিষ্ট পাতলা আবরন দ্বারা আবৃত।

২)Cytoplasm:
কোষের মধ্যে দানাদার সাইটোপ্লাজম এবং একটি বড় নিউক্লিয়াস থাকে।এছাড়া সাইটোপ্লাজমে বিভিন্ন ধরনের সাইটোপ্লাজমীয় অঙ্গানু যেমন-মাইটোকড্রিয়া,গলগি বস্তু,রাইবোসোম ইত্যাদি বিদ্যমান।

৩)Nematocyst:
নিডোব্লাস্ট কোষের স্ফীত অঞ্চলে সূত্রক ধারনকারী থলি বা ক্যাপসুলটিকে নেমাটোসিস্ট বলা হয়।ইন্টারস্টিসিয়াল কোষের গহবর থেকে নেমাটোসিস্টের উ পত্তি হয় বলে ধারনা করা হয়।গঠন ও কাজের উপর ভিত্তি করে বিজ্ঞানী Werner(1965) নিডারিয়া পর্বের প্রানীদেহে ২৩ প্রকারের নেমাটোসিস্ট আবিস্কার করেন।এদের মধ্যে চার ধরনের নেমাটোসিস্ট হাইড্রাতে পাওয়া যায়।

ক)স্টিনোটিলঃ


> এই ধরনের নেমাটোসিস্ট সর্বাপেক্ষা বৃহত্তম।এর ক্যাপসুলটি প্রায় ১৬ মাইক্রন ব্যাসবিশিষ্ট।
> স্বাভাবিক অবস্থায় সূত্রকটি ক্যাপসুলের ভিতরে প্যাচানো অবস্থায় থাকে,কিন্তু নিক্ষিপ্ত অবস্থায় সূত্রকটি সোজা থাকে।
> সূত্রকের প্রশস্ত গোড়াকে বাট বা স্যাফট বলে এবং বাটের গোড়ার দিকে বার্ব নামক তিনটি বড় তীক্ষন কাটা থাকে।
> শীর্ষভাগের সরু অংশে বার্বিউল নামক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কাটা তিন সারিতে সর্পিলাকারে বিন্যস্ত থাকে।
> সূত্রকটি শিকারের দেহে অনুপ্রবেশ করে বলে এদেরকে পেনিট্র্যান্টও বলে।
কাজঃ
> শিকার ধরা,শিকারকে আটকে রাখা এবং আত্নরক্ষার কাজে ব্যবহৃত হয়।
> শিকারের দেহে হিপনোটক্সিন নামক বিষাক্ত তরল প্রবেশ করিয়ে শিকারকে দূর্বল করে বা মেরে ফেলে।

খ)ভলভেন্টঃ


> এর ক্যাপসুল নাসপাতির আকৃতির এবং অপেক্ষাকৃত ছোট,ব্যাস প্রায় ০৭ মাইক্রন।
> সূত্রকটি খাটো,মোটা,স্থিতিস্থাপক এবং অগ্রপ্রান্ত বন্দ।
> ক্যাপসুলের ভেতরে সূত্রকটি একটিমাত্র পযাচে গুটানো থাকে।
> সূত্রকটি নিক্ষিপ্ত হওয়ার সাথে সাথে স্ক্রুর ন্যায় অনেকগুলো পযাচ গঠন করে।
> এর বাট সুগঠিত নয় এবং বাটে বার্বস ও বার্বিউল থাকে না।
কাজঃ
> শিকারকে প্যাচিয়ে ধরে রাখতে সাহায্য করে।
> হাইড্রার চলনে এই সুত্রকটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

গ)স্ট্রেপটোলিন গ্লুটিনেন্টঃ


> এদের ক্যাপসুল ডিম্বাকার এবং ব্যাস প্রায় ০৯মাইক্রন।
> সূত্রকটি লম্বা এবং সূত্রকের দৈর্ঘ্য বরাবর ছোট ছোট কাটা সর্পিলাকারে বিন্যস্ত।
> সুত্রকটির বাট সুগঠিত নয় এবং সূত্রকের শীর্ষ উন্মুক্ত।
কাজঃ
> এই সূত্রকটি খাদ্য প্রানীকে চাবুকের মত আঘাত করে শিকারকে দূর্বল করে ফেলে।
> এছাড়া শিকারকে আটকে রাখতে এবং চলনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।


ঘ)স্টেরিওলিন গ্লুটিন্যান্টঃ

> এদের ক্যাপসুল সর্বাপেক্ষা ক্ষুদ্র এবং ব্যাস ০৬মাইক্রন।
> এদের বাট সুগঠিত নয় বা অনুপস্থিত।
> সূত্রকটি অপেক্ষাকৃত ছোট এবং ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আনুবীক্ষনিক কাটা যুক্ত।
কাজঃ
> এই ধরনের সূত্রক এক ধরনের আঠালো রস নিঃসৃত করে শিকারকে আটকে রাখে।
> হাইড্রার চলনেও এর ভূমিকা রয়েছে।
৪)Operculum:
নেমাটোসিস্টের সূত্রক ও ক্যাপসুল একটি ঢাকনা দিয়ে ঢাকা থাকে।একে অপারকুলাম বলে।
৫)Cytoplasmic Fibrial:
ক্যাপ্সুলের পৃষ্ঠদেশ থেকে কতকগুলো ক্ষুদ্র পেশিতন্তু উ পন্ন হয়ে সাইটোপ্লাজমে প্রবেশ করে এবং পরে সবগুলো তন্তু একত্রিত হয়ে নিডোব্লাস্টের বৃন্তের মত গোড়ার অংশের মধ্য দিয়ে মেসোগ্লিয়ার সাথে যুক্ত থাকে।এছাড়া একটি মোটা পযাচানো সুতার ন্যায় অঙ্গ নিডোব্লাস্টের তলদেশ হতে বের হয়ে ক্যাপসুলের সাথে যুক্ত থাকে,একে ল্যাসো বলে।
৬)Cnidocil:
নিডোব্লাস্ট কোষেড় মুক্ত প্রান্তের একপাশে অবস্থিত দৃঢ,ক্ষুদ্র ও সংবেদনশীল রোম থাকে,একে নিডোসিল বলে।নিডোসিল সূত্রক নিক্ষেপের জন্য বন্দুকের ট্রিগারের মত কাজ করে।
নিডোব্লাস্টের কাজঃ
> শিকার ধরার কাজে ব্যবহৃত হয়।
> চলাচলে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।
> কোন বস্তুর সাথে দেহকে আটকে রাখতে সহায়তা করে।

> হাইড্রার আত্বরক্ষার কাজে এই কোষগুলোর ভূমিকা উল্লেখযোগ্য।

Monday, 23 June 2014

Epidermis of hydra

হাইড্রা নিডারিয়া পর্বের দ্বিস্তরী প্রাণী।গ্রিক পুরানে কথিত আছে যে,গ্রিসে হাইড্রা নামের নয় মস্তক বিশিষ্ট্ এক কাল্পনিক দৈত্য ছিল।সর্বপ্রথম ১৭০২ খ্রিস্টাব্দে অ্যান্টনি ভ্যান লিউয়েনহুক হাইড্রা এর বর্ননা করেন।হাইড্রার দেহ মূলত কেন্দ্রীয় গযাস্ট্রোভাস্কুলার গহবর বা সিলেন্টেরন এবং তাকে ঘিরে দেহপ্রাচীর নিয়ে গঠিত।হাইড্রা বহুকোষী প্রানী বিধায় এর দেহপ্রাচীরের কোষগুলো এপিডার্মিস এবং গ্যাস্ট্রোডার্মিস নামক দুটি স্তরে বিন্যস্ত থাকে।এই দুটি স্তরের মাঝে মেসোগ্লিয়া নামক জেলির ন্যায় অকোষীয় স্তর বিদ্যমান।পরিনত হাইড্রার দেহ প্রাচীরের সর্বাপেক্ষা বাইরের কোষীয় স্তরকে এপিডার্মিস বলে।গঠনগত ও কার্যগত দিক দিয়ে বৈচিত্র্যময় সাত প্রকার কোষের সমন্বয়ে এপিডার্মিস গঠিত।নিন্মে কোষগুলো গঠন ও কাজ আলোচিত হলঃ


১)Masculoepithelial cell:

গঠনঃ


এই কোষগুলো হাইড্রার বহিঃত্বকের সমস্ত স্থান জুড়ে অবস্থিত।
০কোষগুলো স্তম্বাকার,তবে কতকটা উলটানো T অক্ষরের মত।
০ প্রতিটি কোষের অভ্যন্তরে একটি ডিম্বাকার নিউক্লিয়াস ও সাইটোপ্লাজম থাকে।
০ সাইটোপ্লাজমের মধ্যে কতগুলো গহবর,অণুসূত্র এবং বাইরের প্রান্তের দিকে অনেকগুলো মিউকাস বস্তু থাকে।
০ প্রতিটি কোষের বাইরের প্রান্ত প্রশস্ত এবং ভেতরের প্রান্ত তুলনামূলকভাবে সরু।
০ প্রতিটি কোষের বাইরের প্রান্ত পরস্পরের সাথে যুক্ত।
০ কোষের ভেতরের সরু অংশের শেষ প্রান্তে এক বা একাধিক মায়োনিম নামক সংকোচনশীল তন্তু সম্বলিত পেশী লেজ বিদ্যমান।
০ কর্ষিকাস্থিত কোষগুলো বেশ চড়া ও চ্যাপ্টা।এদের কিনারা পাতলা এবং মধ্যস্থল পুরু।

কাজঃ
০ কোষের প্রশস্ত প্রান্ত বহিরাবরন সৃষ্টির মাধ্যমে দেহকে বাইরের বিপদ-আপদ হতে রক্ষা করে।
০ কোষের সরু অংশের পেশী লেজ অণুদৈর্ঘ্য পেশীস্তরের সৃষ্টির মাধ্যমে দেহকে সংকোচন ও প্রসারন ঘটিয়ে হাইড্রাকে চলনে সাহায্য করে।
০ মিউকাস বস্তুগুলো মিউকাস নিঃসৃত করে হাইড্রাকে কোন কিছুর সাথে আটকে রাখতে সাহায্য করে।

২)Interstitial cell:

গঠনঃ

০এরা মেসোগ্লিয়া ঘেষে অবস্থিত।
০ এরা ক্ষুদ্র গোলাকার এবং ৫ মাইক্রন ব্যাসবিশিষ্ট।
০ নিউক্লিয়াস বড় ও স্পষ্ট।
০ সাইটোপ্লাজম গাঢ় এবং এতে অন্তঃপ্লাজমীয় জালিকা,রাইবোজোম ও মাইটোকনড্রিয়া থাকে।

কাজঃ
০ এরা হাইড্রার পুনরু পত্তি,বৃদ্ধি ও জননাঙ্গ গঠনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।
০ এরা প্রয়োজনে দেহের যে কোন কোষে রুপান্তরিত হতে পারে।

৩)Nerve cell:

গঠনঃ
০ এই কোষগুলো মেসোগ্লিয়ার সংস্পর্শে অপেক্ষাকৃত ভেতরের দিকে থাকে।
০ প্রতিটি কোষ দেখতে পঞ্চভূজের মত এবং এতে একটি সুস্পষ্ট নিউক্লিয়াস থাকে।
০ কোষের প্রতিটি কোন হতে একটি করে অণূসূত্র প্রসারিত থাকে এবং প্রতিটি অণুসূত্র শাখান্বিত হয়ে মেসোগ্লিয়ায় স্নায়ু  জালকের সৃষ্টি করে।
০ কোষগুলো অণূসূত্রকের সাহায্যে সংবেদী কোষের পাদদেশে এবং পেশী আবরনী কোষের অণূসূত্রকের সাথে যুক্ত থাকে।

কাজঃ
সংবেদী কোষ দ্বারা গৃহীত উদ্দীপনার উপযুক্ত প্রতিবেদন সৃষ্টি করাই স্নায়ু কোষের প্রধান কাজ এবং বিভিন্ন কোষের কাজের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে।

৪)Sensory cell:
গঠনঃ

এই কোষগুলো দুটি পেশী আবরণী কোষের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত।
০ কোষগুলো লম্বা ও সরু,তবে মধ্যভাগ স্ফীত।
০ স্ফীত অংশে একটি বৃহদাকার নিউক্লিয়াস থাকে।
০ প্রতিটি কোষের মুক্ত প্রান্তে কয়েকটি সংবেদী রোম থাকে এবং মেসোগ্লিয়া সংলগ্ন প্রান্তে কয়েকটি অণূসূত্র থাকে।
০ অণূসূত্র গুলোর সাহায্যে এরা স্নায়ু কোষের সাথে যুক্ত থাকে।

কাজঃ
এরা পরিবেশ হতে উদ্দীপনা গ্রহন করে স্নায়ুকোষে পৌছে দেয়।

৫)Gland cell:

গঠনঃ


০ এই কোষগুলো হাইড্রার পাদচাকতি ও হাইপোস্টোমে থাকে।
০ কোষগুলো স্তম্ভাকার এবং এদের বাইরের দানাদার ও ভেতরের প্রান্ত পেশী দ্বারা প্রলম্বিত।
কাজঃ
০ পাদচাকতির গ্রন্থি কোষসমূহ গ্যাসের বুদবুদ সৃষ্টি ও ক্ষনপদ বিস্তার করে চলনে সহায়তা করে।
০ হাইপোস্টোমের গ্রন্থি কোষ নিঃসৃত মিউকাস খাদ্য গ্রহনে সাহায্য করে।

৬)Germ cell:

গঠনঃ


০ এরা দেহের জননাঙ্গে থাকে।
০ এদের শুক্রাণু ক্ষুদ্র,গোলাকার মাথা এবং লম্বা লেজ বিশিষ্ট।
০ ডিম্বাণু বড় ও গোলাকার।

কাজঃ
যৌন জননে অংশ গ্রহন করাই এদের প্রধান কাজ।

৭)Cnidocyte cell:

গঠনঃ

০ এই কোষগুলো হাইড্রার পাদচাকতি ব্যাতীত দুটি পেশী আবরনী কোষের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত।
০ কোষগুলো দেখতে লাটিমের মত।প্রতিটি কোষের মেসোগ্লিয়ার দিক সরু,মধ্য অংশ স্ফীত এবং বাইরের দিক সরু।
০ প্রতিটি কোষ বহিঃ ও অন্তঃআবরনী দ্বারা আবৃত থাকে।এই দুই আবরণির মধ্যবর্তী স্থানে সাইটোপ্লাজম ও একটি সুস্পস্ট নিউক্লিয়াস থাকে।
০ কোষের স্ফীত অংশের কেন্দ্রস্থলে অন্তঃআবরণী দ্বারা ঘেরা হিপনোটক্সিন পূর্ণ এবং প্যাচানো সূত্রক সম্বলিত একটি থলি বা নেমাটোসিস্ট থাকে।
০ থলির অগ্রপ্রান্তের সাথে সূত্রকটি যূক্ত থাকে এবং এর গোড়াতে তিনটি বার্ব বা কতকগুলো বার্বিউল থাকে।
০ সূত্রক ও থলির সংযোগস্থলে একটি অপারকুলাম থাকে।
০ নেমাটোসিস্টের চতুর্দিকে সাইটোপ্লাজমের একটি সংকীর্ন স্তর থাকে এবং এই স্তরে কতকগুলো অণূসূত্র জালিকাকারে সজ্জিত থাকে।
০ নিডোব্লাস্ট কোষের মুক্ত প্রান্তের এক পাশে একটু উচু স্থানে একটি নিডোসিল থাকে।
০ এ ছাড়া নেমাটোসিস্টের সাথে একটি ল্যামেলা যুক্ত থাকে।
গঠন ও কার্যের পার্থক্যের জন্য হাইড্রার দেহে চার প্রকার নেমাটোসিস্ট থাকে-
ক}পেনিট্রান্ট খ}ভলভেন্ট গ}স্ট্রেপটোলিন গ্লুটিনান্ট ঘ}স্টেরিওলিন গ্লুটিনান্ট।

কাজঃ

শিকার ধরা, আত্নরক্ষা ও চলনে সাহায্য করাই এই কোষের প্রধান কাজ।