Pages

Friday 28 February 2014

Future of Pearl Culture in Bangladesh



বাংলাদেশে মুক্তা ফিশারীজের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাঃ


বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মুক্তা উৎপাদনের জন্য বিভিন্ন প্রজাতির ঝিনুক চাষ করা হয়। এই ক্ষেত্রে জাপান সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য স্থান দখল করে আছে। এই দেশটি ১৯৬২ সালে ৩ কোটি ডলারের মুক্তা রফতানী করেছে। বাংলাদেশেও মুক্তা চাষের ভবিষ্যৎ খুবই সম্ভাবনাময়। কারন,স্থানীয় প্রজাতির মুক্তা-ঝিনুক চাষ অধিকতর সহজ। এই সব মোলাস্ক আমাদের মোহনা এলাকায় প্রাকৃতিক পরিবেশে তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি পেয়ে থাকে।

মুক্তা ফিশারীর সাথে সংশ্লিষ্ট বিষোয়াদি বিশেষ করে মুক্তা প্রদানকারী ঝিনুক চাষের জন্য অনুকুল পরিবেশ আমাদের দেশে বিদ্যমান । মুক্তা-ঝিনুকের লার্ভার বৃদ্ধি এবং বসবাসের জন্য যে বাস্তুতান্ত্রিক অবস্থা যেমন ,পানির তাপমাত্রা,স্রোত,অন্যান্য ভৌগলিক ফ্যাক্টর ইত্যাদি যাহা থাকা দরকার তাহা বাংলাদেশের উপকূলবর্তী এলাকার পানিতে বর্তমান । তাছাড়া , জোয়ারের সময় স্রোতের টানে মুক্তা-ঝিনুকের ভ্রুন বা লার্ভাগুলি উপকূল ও মোহনা এলাকার পানির তলদেশে এসে জমা হয় । এই সময় উহাদের সংগ্রহ করে চাষের ব্যবস্থা করা যায় । 

সংগৃহিত চারা বা লার্ভার লালন পালন এবং পরিচর্যার জন্য দেশের দক্ষিনাঞ্চলীয় জেলাগুলোতে অনুকূল পরিবেশ বিড়াজমান । মুক্তা চাষের জন্য পানির তলদেশের মাটির অবস্থার বিশেষ স্বকীয়তা থাকা দরকার । কক্সবাজার,টেকনাফ ও সন্নিহিত এলাকায় অনুরুপ বিস্তির্ন ওয়েস্টার শয্যা রয়েছে । তাই এসব এলাকায় ঝিনুক চাষ করে প্রচুর মুক্তা উৎপাদন করা সম্ভব ।

সমুদ্র এলাকা ছাড়াও বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অসংখ্য বিল,ঝিল ও হাওড় এলাকায় স্থানীয় প্রজাতির মিঠা পানির ঝিনুক চাষ করে ও মুক্তা উৎপাদনের ব্যবস্থা করা যায় । মুক্তা ঝিনুকের চাষের জন্য এসব জলাধারের মাটি খুবই উপযোগী । তাছাড়াও স্থানীয় ঝিনুক চাষের পাশাপাশি বিদেশী উন্নত প্রজাতির ঝিনুক চাষের প্রচলন করা যায় যাতে করে সর্বোৎকৃষ্ট মানের মুক্তা উৎপাদন সম্ভব হয় ।

দুঃখ্যজনক হলেও সত্য যে,  মুক্তা ফিশারীর উন্ন্যয়ন ও সম্প্রসারনের জন্য এখনও আমাদের দেশে কোন প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গড়ে উঠে নাই । মক্তা ঝিনুকের রোগব্যাধি নিরাময়ের জন্য আদৌ কোন ব্যবস্থা না থাকায় লার্ভাগুলো বেড়ে উঠার কোন সুযোগ পাচ্ছে না । অনেক সময় উপকূল ও মোহনা এলাকায় প্রচুর পলি জমে ঝিনুক চাষের স্থান ভড়াট হয়ে যায় ,কিন্তু পলি অপসারনের কোন ব্যবস্থা না থাকায় মুক্তা ফিশারীর প্রভুত ক্ষতি হচ্ছে । ব্যাপক সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও মুক্তা উৎপাদনে দেশ এখনও অনেক পিছিয়ে আছে । আমাদের মত অনুন্নত দেশে মুক্তা ফিশারীর মত শিল্পে বিজ্ঞানসম্মত ভাবে পুজি বিনিয়োগ করলে এই শিল্প প্রসার লাভের উজ্জল সম্ভাবনা রয়েছে ।

Thursday 27 February 2014

Pearl Culture



Pearl  Culture

মুক্তা একটি মূল্যবান বস্তু।আধুনিক সমাজে মুক্তা খুবই সমাদৃত।“পার্ল ওয়েস্টারের ম্যান্টল-গহবরে অবস্থিত ন্যাকার গ্রন্থি থেকে ক্ষরিত পদার্থ কোন বহিরাগত বস্তুর চারিদিকে রিং-এর ন্যায় স্তরে স্তরে সঞ্চিত যে উজ্জ্বল চকচকে বস্তু তৈরি করে তাকে মুক্তা বলে”।Pinctada margaritifera , Pinctada maxima, Pinctada radiate, Pinctada vulgaris, Pinctada fucata নামক ঝিনুক থেকে কৃত্রিম উপায়ে মক্তা চাষ সম্ভব।যে কোন আয়তনের একটি পুকুর বা বিলেও ঝিনুক তথা মুক্তা চাষ করা যায়।মুক্তা চাষের ধাপগুলো নিম্নে পর্যায়ক্রমে বর্ননা করা হলঃ


মুক্তা ঝিনুক সংগ্রহঃ মুক্তা ঝিনুক সংগ্রহের আদর্শ সময় গ্রীষ্মের সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত।সাধারনত ডুবুরীরা মুক্তা-ঝিনুক সংগ্রহ করে থাকে।মুক্তা-ঝিনুক সংগ্রহের পর বয়স অনুযায়ী বাছাই করে আলাদা করা হয়।


মুক্তা-ঝিনুক পালনঃ বাছাইকৃত বাচ্চা ঝিনুক পালনের জন্য পালন খাচায় স্থানান্তর করা হয়।বাচ্চা ঝিনুক পালনের জন্য ৪-৬টি প্রকোষ্ঠবিশিষ্ট পালন খাচা ব্যবহৃত হয়।খাচাগুলোকে পরের বছরের জুন-জুলাই মাস পর্যন্ত সমুদ্রের তলদেশে রেখে উঠিয়ে নেয়া হয়।এক বছর বয়সের ঝিনুককে আলাদা করে সমুদ্রের ৫ মিটার গভীরে অসমান তলদেশে ছড়িয়ে দেয়া হয়।এভাবে দুবছর ধরে পালন করার পর সেগুলোকে তুলে নিউক্লিয়াস প্রবেশ করানোর জন্য গবেষনাগারে আনা হয়।

 নিউক্লিয়াস প্রবিষ্টকরনঃ যে সব মুক্তা-ঝিনুকে নিউক্লিয়াস প্রবেশ করানো হবে সেসব মুক্তা-ঝিনুককে সমুদ্রের গভীর স্থানে ভেলা থেকে সংগ্রহ করে সমুদ্রের পানিতে মেনথল মিশিয়ে শ্বাসরোধ প্রক্রিয়ায় সংজ্ঞাহীন করে গবেষনাগারে আনা হয়।যে বহিরাগত বস্তুর চারপাশে ন্যাকার জমা হয়ে মুক্তা সৃষ্টি করবে তাকে নিউক্লিয়াস বলে।এই পদ্ধতিতে একটি ঝিনুকের ম্যান্টেলের ক্ষুদ্র টুকরা অন্য একটি ঝিনুকের মধ্যে প্রবেশ করানো হয়। এই ক্ষেত্রে গ্রাফট-টিস্যু ২-৭ মিলিমিটার হওয়াই বাঞ্চনীয়।অপারেশন টেবিলে একটি জীবন্ত ঝিনুককে ক্লাস্পের সাহায্যে এমনভাবে আটকানো হয় যাতে ডান খোলকটি উপরের দিকে থাকে।ম্যানটেল পর্দাকে উন্মুক্ত করে এপিথেলিয়াম টিস্যুর উপর একটি নালীকা সৃষ্টি করা হয়।এই নালীকা ঝিনুকের আন্তর যন্ত্র পর্যন্ত বিস্তৃত।এই নালীকার মধ্য দিয়ে গ্রাফট-টিস্যু নির্বাচিত স্থানে স্থাপন করা হয়।দ্বিতীয় আরেকটি নিউক্লিয়াস প্রতিষ্ঠা করার জন্য বামদিক থেকে অপারেশন করে জনন অঙ্গের নিকট গ্রাফট টিস্যু স্থাপন করা হয়।








মুক্তা সংগ্রহঃ নিউক্লিয়াস যুক্ত ঝিনুকগুলিকে খাচায় রেখে ২-৩ মিটার পানির গিভীরতায় স্থাপন করা হয়।যে খাচায় এদের রাখা হয় তার তলায় নাইলনের জাল থাকে এবং এই জালে আবদ্ধ ঝিনুকদের সাত দিন সমুদ্রের পানিতে রাখা হয়।অতপর উপযুক্ত মুক্তা-ঝিনুকের ভেলা থেকে সমুদ্রের পানিতে আঠার মাস রেখে দেয়া হয়।আঠার মাস পর এদের পানি থেকে খাচাসহ তুলে ঝিনুকের ভেতর থেকে মক্তা সংগ্রহ করা হয়।


মুক্তা চাষ অত্যন্ত লাভজনক শিল্প।তত্ত্বগতভাবে ইহা একটি সহজ প্রক্রিয়া হলেও কার্যক্ষেত্রে অনেক কঠিন সমস্যার মোকাবেলা করতে হয়।ঝিনুকের দেহ থেকে মুক্তা সংগ্রহের পর সাবধানে সাবান-পানি দিয়ে ধুয়ে মুছে বর্ন ও আকারের ভিত্তিতে আলাদা করে বাজারজাত করা হয়।

Wednesday 26 February 2014

Entamoeba histolytica



Entamoeba histolytica মানুষের মারাত্ত্বক আমাশয় রোগ সৃষ্টিকারী একটি অন্তঃপরজীবী প্রানী।এটা মানুষের ডায়রিয়া,রক্ত আমাশা,যকৃতের এ্যাবসেস ইত্যাদি রোগের জন্যও দায়ী।এসকল রোগকে একত্রে এমিবিয়াসিস বলে।এটার জীবনচক্রের বিভিন্ন পর্যায় গুলি আলোচিত হল।

ট্রফোজয়েট পর্যায়ঃ জীবনচক্রের প্রথম দশায় সক্রিয় ম্যাগনা এবং নিষ্ক্রিয় মাইন্যুটা ট্রফোজয়েট দেখা যায়।ট্রফোজয়েট দ্বি-বিভাজনের মাধ্যমে অযৌন পদ্বতিতে বংশবৃদ্ধি করে।এ সময় প্রথমে নিউক্লিয়াস সহ সাইটোপ্লাজম মাইটোসিস পদ্বতিতে মাঝ বরাবর বিভক্ত হয়ে দুটি অপত্য কোষের সৃষ্টি করে।পরে অপত্যকোষগুলি অন্ত্রের মিউকাস স্তরকে খাদ্য হিসাবে গ্রহন করে বৃদ্ধি লাভ করে এবং পুনরায় দ্বি-বিভাজন প্রক্রিয়ায় বংশবৃধ্বি করে।

প্রি-সিস্টিক পর্যায়ঃ নতুন সৃষ্ট অপত্য কোষগুলোর মধ্যে কিছুসংখ্যক অন্ত্রের মিউকাস স্তর ধ্বংস করে।অন্যগুলো পোষককে আক্রমন না করে অন্ত্রের গহবরে চলে আসে এবং খদ্যগ্রহন বন্ধ করে প্রি-সিস্টিক পর্যায়ে উপনিত হয়।




সিস্টিক পর্যায়ঃ প্রিসিস্টিক পর্যায়ে পোষক দেহ থেকে বের হবার পুর্বে এরা দেহের চারিদিকে প্রতিরোধক্ষম আবরন সৃষ্টি করে দেহকে আবৃত করে।এ পর্যায়ে নিউক্লিয়াসিটি দুইবার মাইটোটিক বিভাজনের মাধ্যমে চারটিতে পরিনত হয়।পরবর্তিতে পরিনত সিস্ট পোষকের মলের সাথে বাইরে বেরিয়ে আসে।

মেটাসিস্ট পর্যায়ঃ পরিনত সিস্টবহনকারী পানি বা খাদ্যবস্তু কোন সুস্থ মানুষ গ্রহন করলে সিস্টগুলি অবিকৃত অবস্থায় পাকস্থলি হয়ে ক্ষুদ্রান্ত্রে প্রবেশ করে।ক্ষুদ্রান্ত্রের ট্রিপসিন সিস্ট আবরনকে দ্রবিভূত করে চারটি নিউক্লিয়াস যুক্ত Entamoeba বের হয়ে আসে।এদেরকে মেটাসিস্ট বলে।


পরিনত মেটাসিস্ট দ্বি-বিভাজনের মাধ্যমে আটটি অপত্য অ্যামিবুলি সৃষ্টি করে এবং অ্যামিবুলিগুলি বৃদ্ধি পেয়ে ট্রফোজয়েটে পরিনত হয়ে অন্ত্রের মিউকাস কোষ ধবংস করে এর মধ্যে বসবাস শুরু করে।এটি দ্বি-বিভাজন প্রক্রিয়ায় পুনরায় বংশবৃদ্ধির মাধ্যমে জীবনচক্রের পুনরাবৃত্তি ঘটায়।

Wuchereria bancrofti



                                                                                        Wuchereria  bancrofti  এক ধরনের মারাত্ত্বক রোগসৃষ্টিকারী পরজীবী গোলকৃমি যা Human Filaria Worm নামে পরিচিত।এই পরজীবী দ্বারা আক্রান্ত মানুষকে ফাইলেরিয়ার রোগী বলে এবং সৃষ্ট রোগটিকে বাংলায় গোদ রোগ বলে।এই পরজীবীটি মানুষের লসিকা গ্রন্থি ও লসিকা নালীতে বাস করে।মূখ্য পোষক মানুষ এবং গৌন পোষক স্ত্রী মশকীর মাধ্যমে পরজীবীটি তার জীবনচক্র সম্পন্ন করে।নিম্নে উক্ত পরজীবীটির জীবনচক্র বর্ননা করা হলঃ

মানুষের লসিকা গ্রন্থি ও লসিকা নালীতে পুরুষ এবং স্ত্রী মিলনের ফলে গাইগোট সৃষ্টি হয়।স্ত্রী প্রানীটি জরায়ুজ।ভ্রুন গঠিত হওয়ার পর মাতার জরায়ু হতে বের হয়ে পোষক দেহের রক্তস্রোতে ঘুরে বেড়ায়।এরা দিনের বেলায় রক্তবাহী নালী এবং রাতের বেলায় চর্মাবরনের নীচে শাখা নালীকা গুলিতে চলে আসে।এ সময় এগুলোকে 







 মাইক্রোফাইলোরিয়া বলে।গোদ রোগে আক্রান্ত কোন রোগীকে স্ত্রী মশা দংশন করলে রক্তস্রোতের মাধ্যমে মাইক্রোফাইলেরিয়াগুলি মশকীর পাকস্থলিতে স্থানান্তরিত হয়।্দুএকদিনের মধ্যে পাকস্থলীর প্রাচীর ভেদ করে মশকীর বক্ষপেশীতে আশ্রয় নেয় এবং সেখানে তিনটি রূপান্তর ধাপ অতিক্রম করে হিমোসিল হয়ে মশকীর মুখপাঙ্গের প্রবোসিস আবরনে এসে জড়ো হয়।

এ অবস্থায় মশকী কোন সুস্থ মানুষকে দংশন করলে মানুষের রক্তপ্রবাহে লার্ভাগুলো স্থানান্তরিত হয়।পরবর্তীতে লার্ভাগুলো রক্ত থেকে লসিকা গ্রন্থি ও লসিকা বাহিকায় প্রবেশ করে দুবার খোলস বদলানোর মাধ্যমে পুর্নাঙ্গ কৃমিতে পরিনত হয়।এভাবে একটি জীবনচক্র সম্পন্ন করতে প্রায় এক বছর সময় লাগে।